রাজশাহী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


ড. জোহার আত্মত্যাগের ৫২ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি শিক্ষক দিবসের


প্রকাশিত:
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:১১

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ১৩:৩৯

ছবি প্রতিনিধি

পাঁচ দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও স্বীকৃতি পাননি দেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা। বৃহস্পতিবার ৫২ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জোহা স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে। আয়োজন থেকে দিনটিকে জাতীয় শিক্ষক দিবসের ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

দিবসের কর্মসূচিতে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৭টায় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, চৌধুরী মো. জাকারিয়াসহ প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তাগণ শহীদ ড.জোহার সমাধি ও জোহা স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।

এরপর রসায়ন বিভাগ ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলসহ অন্যান্য আবাসিক হল, শেখ রাসেল স্কুল, সাংবাদিক সংগঠন, পেশাজীবী সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন শহীদ জোহার সমাধি ও স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

এদিন সকাল ১০টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় জোহা স্মারক আলোচনা সভা। এতে রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. আবদুস সালামের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন একুশে পদক প্রাপ্ত রাবির অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. সনৎ কুমার সাহা ।

উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া এবং রসায়ন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন হাওলাদার।

এসময় প্রফেসর সনৎ কুমার বলেন, ড.সৈয়দ শামসুজ্জোহা শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। তাঁর যে ত্যাগ,যে অবদান সেটি গোটা বাঙ্গালী জাতির জন্য অনবদ্য, অনুকরণীয়, অনুসরণীয়। তিনি বীর পুরুষ ছিলেন কাপুরষ নয়। তিনি একজন আদর্শ ছাত্রবান্ধব শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষক হওয়া সহজ কিন্তু সাধারণের শিক্ষক হওয়া কঠিন। তার ভেতর ছাত্র, সহকর্মীদেরকে আপন করে নেওয়ার মতো গুণ ছিল। তার মতো শিক্ষককে এখন আর দেখিনা।

তিনি আরো বলেন, ড. জোহার আত্মত্যাগ ১৯৬৯ সালে দেশের আবছা কল্পনাকে স্পষ্ট করার জন্য একটা বড় ভূমিকা পালন করেছেন। নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের অভিভাবকের মতো রক্ষা করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য তিনি আসলে জীবন দেননি বরং ঘটনা আমাদেরকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে গেছে। তার আত্মদান মানুষের উদ্দীপনার ক্ষেত্র তৈরী করেছিল যেটি স্বাধীনতার পথকে পরিষ্কার করে। স্বাধীনতা কোন সরলরেখায় ঘটেনি। অতএব জোহা ইতিহাসের একটি অনুপ্রেরণার বাতিঘর।

আক্ষেপ করে সনৎ কুমার বলেন, জোহা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলন আরও তরান্বিত হয়। তবে দিবসটি জাতীয় শিক্ষক দিবস ঘোষণা করা হয়নি যা আমাদেরকে ব্যথিত করে।

সেখানে অন্যদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান আল আরিফ, প্রক্টর ও ভারপ্রাপ্ত ছাত্র-উপদেষ্টা প্রফেসর ড.লুৎফর রহমান, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক ড.আজিজুর রহমান, অনুষদ অধিকর্তা, রসায়ন বিভাগসহ অন্য বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে দিবসটিকে ঘিরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি শহীদ ড. জোহা স্মরণে সন্ধ্যা ৭টায় এক অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এছাড়া শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এদিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। 

আরপি/ এসআই-২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top