রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


ক্যাম্পাসে ফিরতে মরিয়া রাবি শিক্ষার্থীরা


প্রকাশিত:
৯ জানুয়ারী ২০২১ ২৩:২৯

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০২:৪২

 রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
করোনা মহামারিতে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও থমকে গেছে। দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। যার আঁচ পড়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যাগুলোতেও। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এর ব্যতিক্রম নয়।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন সেশনজটের শঙ্কা অন্যদিকে দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার কারনে দেখা দিয়েছে হতাশা। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবরও জানা গেছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে জোর দাবি উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় খুুলে দেয়ার। বিশেষজ্ঞদেরও মত ক্যাম্পাস খুলে দেয়া। অন্যথায় দীর্ঘদিন বাড়িতে বন্দিজীবনে থেকে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বন্ধ হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর গত ৯ জুলাই থেকে শুরু হয় অনলাইন ক্লাস। প্রথমের দিকে বিভাগভেদে অনল্ইান ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৫০ শতাংশের ওপরে থাকলেও দিন যাওয়ার সাথে সাথে উপস্থিতির পরিমাণ কমে ২৫ শতাংশের নিচে চলে এসেছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি ক্রমাগত কমছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হওয়ার পেছনে শিক্ষকদের অনেক গাফিলতি রয়েছে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করতে এখনও অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি। অন্যদিকে অনেক শিক্ষক আছেন যারা হঠাৎ করেই দীর্ঘ সময় ধরে ক্লাস নিয়ে থাকেন। তাছাড়ার সশরীরে ক্লাসে উপস্থিত হয়ে পড়াটাকে আনন্দের সঙ্গে করার সুযোগ থাকলেও ভার্চ্যুয়াল ক্লাসে সেটির সুযোগ নেই। কিছু কিছু কোর্স হাতেকলমে শেখার। ফলে সেসব কোর্সে অনলাইনে ক্লাস করে কিছুই বোঝেন না তারা। এতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু বক্কর বলেন, আমাদের অধিকাংশেরই বাড়ি গ্রামাঞ্চলে। গ্রামে ইন্টারনেট গতি নাই বললে চলে। যে কারণে ক্লাসের কথা ভালো বোঝা যায় না। আমাদের গণিত ও পরিসংখান কোর্স আছে। এই কোর্সগুলো অনলাইনে বোঝা অনেক কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। যদি ক্যাম্পাস খুলে দেয়া হয় তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হতাম।

বাংলা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ বলেন, এর আগে কখনও অনলাইনে ক্লাস করা হয় নি। আর আমাদের ক্লাসও নিয়মিত হয় না। শিক্ষকেরা হঠাৎ করে বলে দেয় আজকে ক্লাস আছে। তাই অনেক সময় ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, আমিও চাই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হোক। বিশ্বের অনেক দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছিল। কিন্তু করোনার ব্যাপকতায় তারা আবার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। আমাদেরও এরকম হতে পারে। আর কিছুদিনের মধ্যে হয়তো করোনার ভ্যাক্সিন চলে আসবে আবার শীতও চলে যাবে। তাই আমার মনে হয় ফেব্রুয়ারী-মার্চের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই বেশি ভালো হবে।

এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি শীতের প্রকপ বেড়ে যাবে। ফলে আক্রন্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় আমরা চাই না শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে। তাই পরিস্থিতি অনুকুলে আসলে কর্তৃপক্ষ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবে।  
 
আরপি/ এমএএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top