রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ পন্থায় শিক্ষার্থীদের ফেল করানোর অভিযোগ


প্রকাশিত:
১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০১:২৩

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ২১:২৪

ফাইল ছবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অস্বচ্ছ ও অবৈধ পন্থায় ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে বিভাগের অধ্যাপক আলী আসগরের বিরুদ্ধে।
 
সম্প্রতি বিভাগের অধ্যাপক খাইরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের (ভারপ্রাপ্ত) কাছে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে, অধ্যাপক আলী আসগর অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য ভয় দেখিয়েছেন উল্লেখ করে খাইরুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার (১২.১১.১৯) নগরীর মতিহার থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
 
 
অভিযোগ সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষার্থীদের এগ্রিক্যামেস্ট্রি ও বায়োক্যামেস্ট্রি-২ মিলিয়ে একত্রে ৫০ নম্বরের ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে হয়। এগ্রিক্যামেস্ট্রি কোর্সটি পড়ান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এবং বায়োক্যামেস্ট্রি কোর্সটি অধ্যাপক আলী আসগর ও অধ্যাপক যুগোল কুমার সরকার যৌথভাবে পড়ান। নিয়ম অনুযায়ী যারা ব্যবহারিক পরীক্ষার দায়িত্বে থাকবেন মূল নম্বরপত্রে অবশ্যই তাদের স্বাক্ষর থাকতে হবে। কিন্তু পরীক্ষার দিন অধ্যাপক যুগোল কুমার উপস্থিত থাকলেও ব্যবহারিকের মূল নম্বরপত্রে তাঁর স্বাক্ষর নেই। মূল নম্বরপত্রে শুধু অধ্যাপক আলী আসগর ও অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
 
জানতে চাইলে অধ্যাপক যুগোল কুমার বলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ওই কোর্সের ব্যবহারিক পরীক্ষায় তিনজন শিক্ষার্থী পাশ মার্ক থেকে দু-এক মার্ক কম পায়। ব্যবহারিকে ফেল করলে শিক্ষার্থীদের পুনরায় ওই বর্ষেই থাকতে হয়। তাই অধ্যাপক আলী আসগরকে অনুরোধ করেছিলাম বিশেষ বিবেচনায় পাশ করিয়ে দেওয়া যায় কি না। তিনি শোনেননি। মূল নম্বরপত্র তৈরি করে তার সঙ্গে খসড়া কপি সংযুক্ত করে আমার স্বাক্ষর ছাড়াই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠিয়ে দেন।
 
তবে অধ্যাপক আলী আসগর বলেন, যখন নম্বরপত্র তৈরি করেছি তখন অধ্যাপক যুগোল কুমার অনুপস্থিত ছিলেন। আর অধ্যাপক যুগোল কুমারের হাতে দুয়েকজন শিক্ষার্থী ফেল করে। তিনি আমাকে সেসব শিক্ষার্থীকে জোর করে পাশ করিয়ে দিতে বলেন। আমি দেইনি। তাই সে স্বাক্ষরও করেনি।
 
 
গত ৫ নভেম্বর রেজিস্ট্রার বরাবর দেওয়া অভিযোগে খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালে বিভাগের বিএসসি এজি (অনার্স) পার্ট-২ পরীক্ষা কমিটির সভাপতি থাকাকালীন ফলাফল তৈরির সময় দেখি এগ্রিক্যামেস্ট্রি-১ ও বায়োক্যামেস্ট্রি-২ কোর্স-২১৮ এর পরীক্ষায় তিন শিক্ষার্থী ফেল করেছে। কিন্তু ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরপত্রে সংশ্লিষ্ট কোর্সের আরেক শিক্ষক যুগোল কুমার সরকারের স্বাক্ষর নেই। অথচ শিক্ষক উপস্থিতির হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর আছে। তখন অধ্যাপক যুগোল কুমার জানান অধ্যাপক আলী আসগর নিজের তত্ত্বাবধানে ব্যবহারিক নম্বর জমা দিয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দিয়েছেন। বিএসসি এজি (অনার্স) পার্ট-১ পরীক্ষায় ২০১৭ সালে চারজন এবং ২০১৮ সালে তিনজনকে একই কায়দায় ফেল করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
 
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এমএ বারী বলেন, ‘একটা অভিযোগ পেয়েছি। তবে এখনও অভিযোগটি সম্পূর্ণ দেখা হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 
 
 
উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর অধ্যাপক খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ করে রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত দেন অধ্যাপক আলী আসগর। পরে খাইরুল ইসলাম তার ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছেন জানিয়ে নিরাপত্তা চেয়ে গত শনিবার (০৯ নভেম্বর) থানায় জিডি করেন তিনি।
 
 
আরপি/আআ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top