লকডাউনে জনশূন্য রাজশাহী, রিকশাচালদের ক্ষোভ
সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে বন্ধ রয়েছে রাজশাহীর সকল বিপণী বিতান। সড়ক পরিণত হয়েছে জনশূন্যে। তবে নির্ধারিত কয়েকটি পয়েন্টে বিক্রি হয়েছে টিসিবির পণ্য। যদিও সেখানে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল অনেক কম।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। তবে তাদের প্রতি অসদাচরণের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রিকশা চালকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার সকাল থেকেই নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট, গণকপাড়া, নিউ মার্কেট, হড়গ্রাম বাজার এলাকার সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। জরুরী পরিবহণ ছাড়া গাড়ি চলাচল করেনি। মানুষের কোনো সমাগম নেই সড়কে। পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ছিলেন কড়া প্রহরায়। মাঠে ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। এদিন বাংলা নববর্ষ হলেও কাউকে বর্ষবরণে বের হতে দেখা যায়নি। তবে সকাল থেকে নগরীর লক্ষিপুর এলাকায় রিকশা চলাচল করেছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা রিকশা চালকদের থামিয়ে রিকশার চাকা থেকে বাতাস বের করে ফেলেন। ফলে যাত্রী বহণ করতে পারেননি তারা।
রিকশাচালকরা জানান, পেটের তাগিদে তারা বের হন। কিন্ত পথে পথে পুলিশ তাদেরকে থামায়। বাজে ভাষায় কথা বলে রিকশার চাকার বাতাস বের করে দেয়। ফলে তারা যাত্রী পরিবহণ করা তো দূরের কথা, রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতেই পড়েন বিপাকে। তাদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরীর লক্ষিপুর এলাকায় মেডিকেল ও ডায়াগনস্টিক সংলগ্ন এলাকায় রোগী ও তাদের স্বজনদের পরিবহন করে বিপদে উপকার করার ইচ্ছা নিয়ে রিকশা বের করেছিলেন। এতে কিছু টাকা উপার্জন হলে তাদের সংসার চালানো যেত। আসন্ন ঈদে কিনতে পারতেন নতুন পোশাক। কিন্ত লকডাউনের প্রথম দিনেই পুলিশ সেই পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। রিকশাচালকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে লকডাউন শিথিল করার দাবি জানান।
তবে পুলিশ জানায়, কাউকে কোনো হয়রানি করা হয়নি। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক তাদের দায়িত্ব তারা পালন করেছেন। সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে তারা কোনো কিছু করতে পারবেন না। জরুরী প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাশ নিয়ে বাইরে বের হতে বাধা নেই। তবে কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরতে হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলাম বলেন, ’স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনসাধারণকে যথেষ্ট উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তবে এখন মাঠে শক্ত অবস্থানে প্রশাসন। লকডাউন শতভাগ কার্যকর করতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ’লকডাউন কার্যকরে আরএমপির সকল থানায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মুভমেন্ট পাস ছাড়া কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। তবে সাংবাদিক ও জরুরী সংবাদপত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হকার-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কঠোরতা শিথিলযোগ্য।’
আরপি / আইএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: