রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


‘ক্যাচ প্র্যাকটিস’ করাচ্ছে বাংলাদেশ!


প্রকাশিত:
৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০১:০০

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ২১:১৭

ফাইল ছবি

২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ধুঁকছে রীতিমতো। তখনই ক্রিজে এলেন লিটন দাস। আগের টেস্টের ফর্মটা প্রথম ইনিংসে টানতে না পারলেও সেটা টেনে এনেছিলেন আজ, দ্বিতীয় ইনিংসে। কিন্তু ফিফটির একটু আগে অনেকটা ধারার বিপরীতে গিয়েই যেন উইকেটটা বিলিয়ে দিয়ে এলেন তিনি। তাতে বাংলাদেশও পড়ে গেল দারুণ বিপদে।

মিরপুর টেস্টে আগের ইনিংসে আর দ্বিতীয় দফায় ব্যাটিং মিলিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল ১৯ রানের। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে মিলে লিটন সেটা তো পেরিয়েছেনই, বাংলাদেশকে দেখাচ্ছিলেন টেস্ট বাঁচানোর স্বপ্নও। ১৫০ বলে ৭৩ রানের চমৎকার জুটিও দাঁড়িয়ে গিয়েছিল বেশ।

তবে এরপরই যেন ‘ব্রেইনফেড’ হলো তার। ইনিংসের ৩৪তম ওভার করতে আসা সাজিদ খানের খাটো লেংথের বলটাকে কী ভেবে যেন মারতে চাইলেন স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে। তাতে ব্যাটে বলে তো হলোই না, উল্টো তা গিয়ে জমা পড়ল ফাওয়াদ আলমের হাতে। ৯৮ রানের মাথায় বাংলাদেশ হারালো ৫ উইকেট। ইনিংস হার এড়াতে চাইলে বাংলাদেশের চাই আরও ১১৫ রান।

কে আগে ফিরবেন ড্রেসিংরুমে! ঢাকা টেস্টে যেন এমনই কোন এক প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা। যাওয়া-আসার মিছিল শুরু হয় টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে। ৭১ রান তুলতেই হারিয়ে বসে ৭ উইকেট। সে ধারা অব্যহত থাকল পঞ্চম ও শেষদিনেও। সকালে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলোঅনে পড়ে স্বাগতিকরা। মুমিনুল হকের দল সুবিধা করতে পারছে না দ্বিতীয় ইনিংসেও।

১০১ রান করলে ফলোঅন এড়াতে পারত টাইগাররা। সেটি না পারার খেসারত দিতে হলো ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংস আবার ব্যাট করতে নেমে। ২১৩ রানে পিছিয়ে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। বরারবরের মতো ছন্দহীন টপ অর্ডার। প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারিয়ে ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কায় বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭২ রান। লিটন দাস ২৭ ও মুশফিক ১৬ রান নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে গেছেন।

শেষদিনে খেলা হবে সাকুল্য ৯৮ ওভার। বাংলাদেশ দল ফলোঅন এড়াতে পারলে আবার ব্যাটিং নামতে হতো পাকিস্তানকে। সেক্ষেত্রে শেষদিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার জন্য আরো সময় কমত স্বাগতিকরা। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ ড্রয়ের দিয়ে ধাবিত হতো। তবে অঙ্ক মেলেনি ব্যাটিং দীনতায়। দ্বিতীয় ইনিংসেও একই পরিণত। এতে ইনিংস হারের শঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস যেখানে শেষ হয়, দ্বিতীয় ইনিংসটা যেন সেখান থেকেই শুরু হয়। তবে স্পিনার সাজিদ খানের পরিবর্তে এবার দৃশ্যপটে দুই পেসার শাহিন আফ্রিদি এবং হাসান আলি। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া অভিষিক্ত মাহমুদুল হাসান জয় এবারও ব্যর্থ। হাসানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন দলীয় ১২ রানে। নিজে করেন ৬ রান।

ইনিংসের পঞ্চম ও নিজের তৃতীয় ওভারে বাজিমাত আফ্রিদির। ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউর কাটায় পড়েন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ২ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১২ রানে দুই উইকেট হারায় দল। অধিয়ানায়ক মুমিনুল হক আর নাজমুল হোসেন শান্তও নাম তুলেছেন ব্যর্থতার মিছিলে।

উইকেটের ক্ষুধায় মগ্ন থাকা হাসানের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন মুমিনুল। হাসানের সোজা বল মিস করে এলবিডব্লিউ হন মুমিনুল। এর পরপরই শান্ত আফ্রিদির বলে দ্বিতীয় গালিতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৬ রানে। ২৫ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে বাংলাদেশ দল। প্রথম সেশনে অবশ্য দলকে আর কোন বিপদে পরতে দেননি লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম।

২৩ ওভার ব্যাট করে ৪ উইকেট হারিয়ে ৭২ রানে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ। লিটন দাস ২৭ ও মুশফিক ১৬ রান নিয়ে শেষদিনের দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করবেন। এখন তাদের ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। এই দুই ব্যাটম্যানের বড় একটি পার্টনারশিপই পারে দলকে ইনিংস পরাজয়ের হাত থেকে উদ্ধার করতে।

 

আরপি/ এমএএইচ -০৯



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top