এক নজরে দেখুন কত রকমের পেঁয়াজ খেয়েছেন!
চীন, মিশর, তুরস্ক, ইউএই, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডসসহ এক ডজনের বেশি দেশ থেকে নানা জাতের পেঁয়াজ এসেছে। কিছু পেঁয়াজ এত বড় ছিলো যে, দুই-একটিতেই ওজন দাঁড়ায় ১ কেজির বেশি।
লাল, বাদামি, গোলাপি, সাদা রঙের পেঁয়াজ। ছোট, মাঝারি আর বড় বড় পেঁয়াজ। বেশি ঝাঁজের দেশি পেঁয়াজ। কম স্বাদের বিদেশি পেঁয়াজ। বিশ্বের বিচিত্র সব পেঁয়াজের সঙ্গে পরিচয়ের বছর ২০১৯।
প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের পর এক ডজনেরও বেশি দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। এ বছর ট্রাকে, ট্রলারে, জাহাজে এমনকি উড়োজাহাজে চড়েও এসেছে পেঁয়াজ। পেঁয়াজের বাজারে লাগাম টানতে নিয়মিত খাতুনগঞ্জে অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। হাটহাজারীসহ বিভিন্ন জায়গায় মজুদ করা পেঁয়াজ উদ্ধার করা হয়। এমনকি অবৈধ পথে বিক্রি করা টিসিবির পেঁয়াজ জব্দ করে আদালতে নিলামের মাধ্যমে বিক্রিও করা হয়। তবুও পাইকারিতে ১৯০ এবং খুচরায় ২৫০ টাকার বেশি বিক্রি হয় প্রতিকেজি পেঁয়াজ।
পেঁয়াজ সংকট নিরসনে বাড়ানো হয়েছে টিসিবির ট্রাক সেল। প্রথম দিকে নারী-পুরুষের দীর্ঘলাইনে পড়ে যায়। প্রতিকেজি ৪৫ টাকা বিক্রি করে সরকারি এ সংস্থা। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজে বাজার সয়লাব হওয়ার পর টিসিবি ৩৫ টাকায় বিক্রি শুরু করে।
এর বাইরে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ব্যক্তি উদ্যোগে ভর্তুকিমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন। ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করে পুলিশ নারী কল্যাণ (পুনাক) সমিতি। আওয়াজ ওঠে ‘পেঁয়াজ ছাড়া রান্নার’। চিটাগাং উইমেন চেম্বার মাসব্যাপী এসএমই মেলায় আয়োজন করে পেঁয়াজ ছাড়া রান্না প্রতিযোগিতার।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর কেন্দ্রিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মো. আসাদুজ্জামান বুলবুল জানান, শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এবার সংকটের মৌসুমে ৩৭ হাজার ৩৭৬ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে মিশর থেকে এসেছে ৮ হাজার ৪৭২ টন, চীন থেকে ১১ হাজার ৩৫৯ টন, মিয়ানমার থেকে ১ হাজার ২২৮ টন, তুরস্ক থেকে ১২ হাজার ৩২৫ টন, ইউএই থেকে ৬৬৯ টন, পাকিস্তান থেকে ১ হাজার ৯১৬ টন, শ্রীলংকা থেকে ৬৫৩ টন, নেদারল্যান্ডস থেকে ৭৫৪ টন পেঁয়াজ এসেছে।
উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র সূত্র জানা গেছে, বিভিন্ন বড় শিল্পগ্রুপ থেকে শুরু করে অনেক ক্ষুদ্র আমদানিকারকও পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতি পত্র (আইপি) নিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক পেঁয়াজ দেশে পৌঁছেছে। পাইপ লাইনে আছে দুই-তৃতীয়াংশ। চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়াও টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে এ বছর।
দেশের বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ বিপণি কেন্দ্র হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, পেঁয়াজের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছিল এ বছর। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে সরকারকে। দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ও উৎপাদনে ঘাটতি হিসাব করে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ চাষ করতে হবে। চাষিদের উৎসাহিত করতে হবে। ভারতসহ পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশগুলোতে বন্যা, খরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রফতানিনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতে হবে।সূত্র:বাংলানিউজ
আরপি/এমএইচ
বিষয়: পেঁয়াজ দেশি পেঁয়াজ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: