রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন একটি জটিল কাজ: পিটার হাস


প্রকাশিত:
১১ আগস্ট ২০২২ ০৫:০৪

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ২১:১২

সংগৃহিত

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা একটি জটিল কাজ। কিন্তু সমাজের প্রতিটি অংশের (কল্যাণের) জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে।

এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সরকার, গণমাধ্যম থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নাগরিক সমাজ থেকে রাজনৈতিক দল, সবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বুধবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ইউএসএআইডির ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ‘পলিটিক্স ম্যাটার্স’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, আমি আজকে এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের স্বাগত জানাতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। আপনাদের অনেকের সাথে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে এবং বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে জানার সাথে সাথে আগামীতে আমি বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে দেখা করা অব্যাহত রাখব।

পিটার হাস বলেন, আলাদাভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে আমার ভালো লাগে ঠিকই, তবে আমি বেশি উপভোগ করি এই ধরনের সমাবেশ, যেখানে নীতি ও মতের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একাধিক দলের নেতারা একত্রিত হন। এটিই গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য বা সৌন্দর্য। একটা কথা আমি সুস্পষ্ট করে বলতে চাই যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে অন্য দলের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয় না, সমর্থন করে না।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্বের জন্য গর্বিত। আমরা বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য এই দেশের প্রচেষ্টাকে সবসময় জোরালোভাবে সমর্থন করে আসছি, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের একটি মৌলিক উপায় হলো তাদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া।

তিনি বলেন, জনগণকে তাদের মত ও ইচ্ছা অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য অবাধে নিজেদের ভোট নিজেরা দেওয়ার ক্ষমতার চেয়ে ভালো উপায় আর কী হতে পারে? যদি তাদের কেউ একজন নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় কিংবা তাদের কেউ যদি অন্যকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়, তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আজ আমরা পলিটিক্স ম্যাটারস ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম (politicsmatters.com.bd) চালু করছি। এটি বাংলা ভাষায় তৈরি করা একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেখান থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের কর্মী ও নেতারা তাদের নিজেদের স্মার্টফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করে রাজনৈতিক দলের অনুশীলন, নেতৃত্বের বিকাশ, দ্বন্দ্ব বা সংঘাত নিরসনের উপায় এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোতে বিনামূল্যে অংশ নিতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাকে একথা বলতেই হবে যে, গুগল ট্রান্সলেটরের সহায়তা নিয়ে আমি ইতোমধ্যে প্ল্যাটফর্মটি অনলাইনে ঘুরে দেখেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই উচ্ছ্বসিত একথা ভেবে যে, পলিটিক্স ম্যাটারস প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের রাজনৈতিক নেতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবে। এই ধরনের প্রশিক্ষণ সবার জন্য সহজলভ্য করার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশি নারী ও যুবসমাজকে কার্যকর রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছি। পলিটিক্স ম্যাটারস প্ল্যাটফর্মের একটি প্রশিক্ষণ মডিউল আমাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে, সেটা হলো নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। আমি আশা করি, এই প্রশিক্ষণ রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীদের কণ্ঠস্বরকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

পিটার হাস আরও বলেন, আমি আবারও নিজের আনন্দের কথা বলতে চাই যে, আজ এখানে বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের সিনিয়র প্রতিনিধিরা উপস্থিত আছেন। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি যে, আপনারা বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের নেতা এবং তৃণমূল কর্মীদের উৎসাহিত করবেন, যাতে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র গড়ে তুলতে ও শক্তিশালী করতে এই প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগায়।

আরপি / এসএডি-৯



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top