একসঙ্গে বিয়ে করলেন ৪০ বর-কনে!
জমকালো আয়োজনে দিনাজপুরে একই সঙ্গে ৪০ জন বর-কনের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। কোনোপ্রকার যৌতুক ছাড়াই শুক্রবার (২৭ মে) ওই ৪০ জন এতিম কন্যার বিয়ে সম্পন্ন হয়। শহরের গ্রিনভিউ কমিউনিটি সেন্টারে যৌতুকবিহীন ওই বিয়ের আয়োজন করে লায়ন্স ক্লাব।
জেলা লায়ন্স ক্লাবের অধীনে শিশু নিকেতনের ওই এতিম মেয়েদের বিয়ের অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি ছাড়াও দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি রেজা হুমায়ুন চৌধুরী শামীম, দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মর্তুজা আল মুঈদ, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকসী বাচ্চু, শহর সমাজসেবা অফিসার মাইনুল ইসলাম, করতোয়ার বার্তা সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট লায়ন সৈয়দ মিজানুর রহমান, জোন চেয়ারম্যান (ক্লাবস) লায়ন মোজাফফর আলী মিলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন বিয়ের অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন লায়ন অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ।
অনুষ্ঠানে ইকবালুর রহিম এমপি সবাইকে মহৎ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যৌতুক আমাদের সমাজে একটি ব্যাধি। এই ব্যাধি থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। যে ৪০ জন ছেলে যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করেছে এতিম কন্যাদের, সারা দেশে এটি দৃষ্টান্ত।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতিমদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। তাদের স্বাবলম্বী করতে সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দিনাজপুর শিশু নিকেতন এ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক এতিম মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে।
দিনাজপুর শহরের মূল বাস স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা দক্ষিণে এগোতেই মেলে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড। এখানেই লায়ন্স ক্লাবের পরিচালনায় চলে শিশু নিকেতন হোম। ১০১ জন এতিম শিশুকন্যাকে এখানে লোখাপড়ার পাশাপাশি হাতের কাজ, সেলাই ছাড়াও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে শুক্রবার ৪০ জন এতিম কন্যার উৎসবমুখর পরিবেশে বিয়ে দেওয়া হলো। ৪০ জন পাত্রই ছিলেন দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার। তাদের কেউ ব্যবসায়ী, কেউ গার্মেন্টে চাকরি করেন, কেউবা কৃষিকাজ আবার ওয়ার্কসপের দোকানেও কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন কেউ কেউ।
এ ব্যাপারে শিশু নিকেতনের সভাপতি মোজাফর আলী মিলন গণমাধ্যমকে জানান, এই শিশু নিকেতন থেকে প্রতিবছর মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। এবার একসঙ্গে ৪০ জন এতিম কন্যাকে বিয়ে দেওয়া হলো। তাদের সাইকেল, সেলাই মেশিনসহ সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
আরপি/এসআর-০৭
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: