রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


পদ্মায় বিলীন দশ মিনিটে ১৬ ঘর


প্রকাশিত:
১৪ জুলাই ২০২১ ০৫:২৮

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:২১

পদ্মা নদী ভাঙ্গন। ফাইল ছবি

করোনা মহামারীর বিপদ কাটতে না কাটতেই পদ্মার ভাঙ্গন চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। নদীটি কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের জন্য। শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকালে দশ মিনিটের ভাঙ্গনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১৫০ মিটার এলাকা। এমনটা ঘটছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায়।

নদীভাঙ্গন হুমকির মুখে রয়েছে ইউনিয়নের দুটি গ্রামের শত শত পরিবার। যেকোনো সময় ধসে যেতে পারে বসতভিটা, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ দৌলতদিয়ার লঞ্চঘাট এলাকার মজিদ শেখের পাড়ায় ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা।

এ সময় ভাঙ্গনের কারণে ১৬টি বসতবাড়ি ও ফসিল জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ ছাড়া হুমকিতে রয়েছে লঞ্চঘাটসহ ১ নম্বর ফেরিঘাট। হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিআইডব্লিউটিএ এবং পাউবোর অব্যবস্থাপনার কারণে ১০ মিনিটের ভাঙ্গনে ১০-১৫টি বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। পদ্মাপারের আরও শত শত স্থাপনা হুমকির মধ্যে রয়েছে।

ভাঙ্গনকবলিত এলাকার এক নারী বলেন, “এখন পর্যন্ত ছয় থেকে সাতবার আমাদের বাড়িঘর নদীভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়। এরপর এই মজিদ শেখের পাড়ায় এসে বাড়ি করি। আজ ১০ মিনিটের ভাঙনে আবার বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়। এবার মাথা গোঁজার ঠাঁই আর রইল না।”

পদ্মার ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত বিলাস ব্যাপারী বলেন, “নদী ভাঙতে ভাঙতে আমাদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তারপরও সরকার কিছুই করছে না। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রতিও দাবি জানান তিনি।”

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে আমার এলাকার যে কয়েকটি বসটভিটা রয়েছে, সেটা আর টিকবে না। এখনই নদীভাঙন রোধ করা না গেলে আমার ইউনিয়নের এই মজিদ শেখের পাড়া আর থাকবে না। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।”

তবে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। নদীভাঙন রোধে দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক মামুন বলেন, ”হঠাৎ করে পদ্মায় নদীর লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে ১৬টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঙনের কথা জানার পর প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হবে। পরবর্তীতে তাদের ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।”

জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, “ভাঙনের খবর শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ভাঙনে যাদের ঘর বিলীন হয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা প্রদান করা হবে।”

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top