রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


দুদকের মামলায় জামিনে থাকায় দুইবছর পর 

বেরোবির ৩ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত


প্রকাশিত:
২৪ জুলাই ২০২০ ০৪:২৩

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪:০২

বরখাস্তকৃত ৩ কর্মকর্তা

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) তিনজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার আসামি হয়ে জামিনে থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপাচার্যের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্তকৃতরা হচ্ছেন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এটিজিএম গোলাম ফিরোজ, উপ-রেজিস্ট্রার মোর্শেদ-উল আলম রনি ও উপ-পরিচালক (বাজেট) খন্দকার আশরাফুল আলম।

সাময়িক বরখাস্তকরণ নোটিশ থেকে জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫২(২) ধারায় মামলা হওয়ায় সে মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয় এবং সেসময় চাকরি থেকে তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে বিজ্ঞ স্পেশাল জজ, রংপুর উক্ত মামলার অভিযোগ হতে অব্যাহতি দিলে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

পরবর্তিতে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের বিচারিক আদালতের উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে রুল জারি করে হাইকোর্ট। এবং সে অনুযায়ী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির হয়ে জামিন প্রাপ্ত হন তারা। দূর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় জামিনে থাকার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হওয়ায় সরকারি চাকরিবিধি (পার্ট-১)- এর বিধি ৭৩ এর নোট (২) অনুসারে চাকরি হতে অভিযুক্তত্রয়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক খরপোষ ভাতা প্রাপ্ত হবেন। এই আদেশ ২৩ জুলাই ২০২০ থেকে কার্যকরী হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইতোপূর্বে এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনেও (ইউজিসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬জন কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি ও সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠানো হয়।

ডকুমেন্টস থেকে জানা যায়, ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শেষে দুদক বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত রংপুর বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে বিচারাধীন মামলার নম্বর: স্পেশাল কেস নম্বর- ৮/২০১৭, কোতয়ালী থানার মামলা নম্বর- ৪০/২০১৩, জি আর কেস নম্বর ১০৯৮/১৩ ধারা: ৪০৯/১০৯ দ-বিধি তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এর ধারা ৫(২)।

ওই বিচারিক আদালতে ২০১৭ সালের ২১ অক্টোবর ৮ নম্বর আদেশে উল্লেখিত অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের অভিযোগ হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে দুদক কর্তৃপক্ষ বিচারিক আদালতে ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল ডিভিশন মামলা (নম্বর ৩৮৯/২০১৮) দায়ের করেন।

ওই রিভিশন মামলায় দ্বৈত বেঞ্চ গত বছরের ৩১ জানুয়ারি রুল ইস্যুর আদেশ দেন এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাগণকে রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশনা দেন এবং আদালতকে জামিন দেওয়ার আদেশ দেন।

পরবর্তিতে উল্লেখিত কর্মকর্তাগণ ওই মামলার আসামি হিসেবে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন লাভ করেন। হাইকোর্টে ক্রিমিনাল রিভিশন মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, 'এটা সাবেক উপাচার্য জলিল সাহেবের আমলের সমস্যা। দীর্ঘদিন পরে সকল কাগজপত্র হাতে এসেছে। এজন্য চাকরি বিধি অনুযায়ি তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আইন তার নিজস্ব ধারায় চলবে এখানে কিছু করার নেই। তারা যদি মামলায় জিতে আসে তখন আমরা স্ব-সম্মানে তাদের বরণ করে নেব। আর যদি হেরে যায় তাহলে তো তাদের চাকরি থাকবে বলে মনে হয়না।'

 

আরপি/আআ-০৭



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top