রাজশাহী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


লকডাউন শেষেই পরীক্ষার ঘোষণাতে কলেজ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ


প্রকাশিত:
৪ মে ২০২০ ০৩:২২

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:২১

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলোতে শ্রেণি কার্যক্রম ছাড়াই ‘লকডাউন’ শেষে পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফয়জুল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণার কথা জানানো হয়।

এতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ছুটির মধ্যে বাসায় পড়ালেখা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।পাশাপাশি কলেজগুলোতে অনলাইনে ক্লাস শুরু করতে বলা হয়েছে।

এমন নির্দেশনার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর একাধিক শিক্ষক বলেন, যেখানে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এক সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশীদ নিজেই বলেন, কলেজগুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। কলেজগুলোর সেই অবকাঠামো নেই।

পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও সেই সক্ষমতা নেই। সেখানে হঠাৎ করে তার বিপরীতমুখী নির্দেশনা, বিশেষ করে ক্লাস কার্যক্রম না চালিয়ে পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা চরম স্বেচ্ছাচারিতার শামিল। এটি তুঘলকিকাণ্ড।কয়েকজন কলেজ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, গত কয়েক বছরে সেশনজট নিরসনের নামে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একই স্টাইলে কেবল শিক্ষার্থী ভর্তি ও পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। শ্রেণি কার্যক্রমের বালাই ছিল না।

তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের মধ্যে কলেজগুলো বন্ধ থাকায় ক্লাস কার্যক্রমও বন্ধ। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা মানসিক ট্রমার মধ্যে। অনেকে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিযুক্ত। কেউবা পরিবারের সদস্য নিয়ে টানাপোড়েনে আছে। হাসপাতালেও থাকতে পারে কেউ কেউ। এমন পরিস্থিতিতে ছুটির পর পরীক্ষা নেয়া আগের শুধু ভর্তি আর পরীক্ষা নেয়ার মতো হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সব কলেজকে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এতে বলা বলা হয়, যেসব কলেজের অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সক্ষমতা রয়েছে তারা জরুরি ভিত্তিতে অনলাইনে ক্লাস চালু করবে। যেসব কলেজে অনলাইনে ক্লাসের সুবিধা নেই, তাদেরও দ্রুত এই সুবিধার আওতায় আসতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা মোবাইল অ্যাপ কিংবা জুম সফটওয়্যার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজ অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছে।'

'কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোয় কোনো সেশনজট ছিল না। সেই ধারাবাহিকতা বহাল রাখতে লকডাউন শেষে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের নিমিত্তে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ ঘরে বসে পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে হবে।

এই দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার পর আমরা যেন একের পর এক পরীক্ষা নিতে পারি তার সব প্রস্তুতি কলেজ ও শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সেশনজট নিরসনে আগে যেমন আমরা ক্রাশ প্রোগ্রাম করে সফল হয়েছি, সেরকম মেথড প্রয়োগ করা হবে।'

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, 'শিক্ষার্থীদের মনে রাখা উচিত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সিংহভাগ কারিকুলাম শিক্ষার্থীকে তার নিজ উদ্যোগে সম্পন্ন করতে হয়। এই মহামারি চলাকালীন শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং নিজ নিজ বাড়িতে বসে তার কারিকুলাম অনুযায়ী পাঠগ্রহণ করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ছুটি দীর্ঘায়িত হলে নতুন করে সেশনজটে না পড়তে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য শিক্ষকদের কাজ করে যেতে হবে।

 

 

আরপি/ এমবি



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top