রাজশাহী রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


কৃষ্ণচূড়া রাঙিয়েছে রাজশাহী কলেজ


প্রকাশিত:
২৩ এপ্রিল ২০২০ ১৬:২৬

আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২০ ২৩:১১

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বরে বেড়ে ওঠা কৃষ্ণচূড়ার রঙে এভাবেই সেজেছে রাজশাহী কলেজ

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন ‘গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে/ তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি।’ ফুলের পরিপূরক যে আর কিছু নেই কবির ভাষায় তা স্পষ্ট। সবুজ কিচিমিচির পাতা-ভর্তি গাছে লাল কৃষ্ণচূড়া যেন অপার্থিব এক সৌন্দর্য। কৃষ্ণচুড়া ফুল কার না প্রিয়। কত গান, কবিতা এই কৃষ্ণচুড়াকে ঘিরে। সবুজ পাতায় ঘেরা এই ফুলের লাল রং সবাইকে মাত করে রাখে।

নয়নাভিরাম কৃষ্ণচূড়ার রাঙা ফুলের মায়ায় জড়িয়েছে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের বিদ্যাপিঠ দেশ সেরা রাজাশাহী কলেজ। এ যেন কৃষ্ণচূড়ার ক্যাম্পাস। গ্রীষ্মের শুরুতেই পুরো ক্যাম্পাস যেন কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে রেঙেছে। সূর্যের সবটুকু উত্তাপ যেন কেড়ে নিয়েছে টুকটুকে লাল এই কৃষ্ণচূড়া।

সরজমিনে দেখা যায়, কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের সামনের গাছে আগুন রাঙা ফুল প্রকৃতির সব রঙকে ম্লান করে দিয়েছে। সকালের দিকে ক্যাম্পাসের পিচঢালা কৃষ্ণ বর্ণ রাস্তাগুলো কৃষ্ণচূড়ার ঝরে পড়া রক্ত লাল পাপড়ি যেন পুষ্প শয্যা মনে হয়।

এছাড়া পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, রবীন্দ্র-নজরুল চত্বর, কলাভবন, ফুলার ভবন এবং রসায়ন ভবনের সামনে রয়েছে রক্তবর্ণ এই ফুলের সমাহার। পুরো কলেজ ক্যাম্পাস যেন কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে শোভা পেয়েছে।

কৃষ্ণচূড়ার ইংরেজি নাম ফ্লেম ট্রি। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো ‘ডেলোনিক্স রেজিয়া’। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ যা গুলমোহর নামেও পরিচিত। আমাদের দেশে লাল এবং হলুদ রঙের ফুল দেখা গেলেও সাদা রঙের কৃষ্ণচূড়ার দেখা কালেভদ্রে দেখা যায়।

কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় ১২-১৪ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চলব্যাপী ছড়িয়ে পরে। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়।

রাজশাহী কলেজ উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শির্ক্ষাথী মেহেদী হাসান বলেন, কলেজ ক্যাম্পসে ঢুকতেই দেখা মিলে কৃষ্ণচূড়া ফুলের। করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যেতে পারছি না ক্যাম্পাসে। ফেসবুকে ক্যাম্পাসসহ কৃষ্ণচূড়ার ফুলের ছবি দেখে মনটা আনচান করছে। এ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় কলেজের শিক্ষকসহ সকল বন্ধুদের মিছ করছি বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।

এ ব্যাপারে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা.হবিবুর রহমান বলেন, ফুল শুভ্রতার প্রতীক। আর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এর জুড়ি নেই। এজন্য ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে আমার পূর্ববর্তী অধ্যক্ষসহ নিজ হাতে কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগিয়েছি। পুরো ক্যাম্পাসে ১০-১২ টি গাছ লাগানো হয়েছে। আর এসব গাছের পরিচর্যা কর্মচারীসহ আমি নিজ হাতে করি।

অধ্যক্ষ আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। বর্তমান করোনা ভাইরাসের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় কলেজে প্রাণ নেই। শূণ্যতা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে থাকলে প্রাণ ফিরে আসতো আর কলেজের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পেত। আগামীর সকাল যেন হয় করোনা ভাইরাস মুক্ত বাংলাদেশ বলে জানান অধ্যক্ষ।

 

আরপি/ এআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top