রাজশাহী কলেজ শিক্ষিকার নতুন কীর্তি ‘কাঠগোলাপ’
একটি জাতির কারিগর হচ্ছে শিক্ষক আর এই কারিগরদের প্রধান অস্ত্র হল বই। শিক্ষিত মানুষ ও সভ্য জাতি তৈরিতে সবচেয়ে অগ্রণিভূমিকা পালন করে আসছে বই। বইয়ের মাধ্যমেই পৃথিবীতে রয়ে গেছে হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য শিক্ষা সংস্কৃতি। বর্তমানকে ভবিষ্যতে মনে রাখার জন্যে প্রকাশিত হয়েছে রাজশাহী কলেজ বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাজেরা খাতুনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কাঠগোলাপ’।এ গ্রন্থের চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে মানবজীবনে নিয়ত প্রবহমান হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনা, আশা-হতাশার জীবন্ত আলেখ্য।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ এ সপ্তমদিন থেকেই আলোর ভুবন প্রকাশনীর ১২৮ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে গ্রন্থটি। পরিলেখ প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটির প্রচ্ছদ করেছেন আহমেদ ইউসুফ। সাত ফর্মার বইটিতে ৪৫টি কবিতা রয়েছে।
‘কাঠগোলাপ’ সম্পর্কে লেখিকা বলেন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সভ্যতা থেকে প্রায় বিলুপ্তির পথে বনবরই, শটীফল, পিটুলি ফল, লাটাই, করমচা, তিত বেগুন ফল। প্রকৃতির মাঝে নিতান্তই অবহেলায় বেড়ে ওঠা কলমি ফুল, কচুরিপানা ফুল, কাঠগোলাপও রয়েছে। এ ধরনের ফুলের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পরিচয় করিয়ে দেওয়ায় ইচ্ছে থেকেই কাঠগোলাপ গ্রন্থটি লেখা। সভ্যতা থেকে বিলুপ্ত প্রায় ডাকবাক্স, ডাকপিয়ন, চিঠির মতো এগুলো মিউজিয়ামে স্থান করে নিতে হয়তো পারবে না, তবে আমার কবিতায় স্থান পেয়ে অক্ষয় সৃষ্টি হিসেবে বাংলা সাহিত্যে কীর্তি হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা দুটি কবিতা এ কাব্যে স্থান পেয়েছে। আশা করছি, যেকোনো পাঠক এ কবিতা দুটি পড়ে মুগ্ধ হবেন। কাঠগোলাপে অবহেলিত অন্ত্যজ, ধীবর শ্রেণির মানুষ ও পেশাকেও সামনে নিয়ে আসার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা করেছি। অর্থ,সুনাম,সুখ্যাতি,সফলতার ইচ্ছাই লিখিনি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি কোনোদিন বইমুখী হয়, তাহলে প্রকৃতির এ জিনিসগুলোর সঙ্গে পরিচিত হোক এটাই প্রত্যাশা।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করে লেখিকা বলেন,আমি একজন বিসিএস কর্মকর্তা ও ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজের শিক্ষক। কালের আবর্তে এ পরিচয় একদিন বিলীন হয়ে যাবে। একদিন আমার অস্তিত্ব এ পৃথিবী থেকে চিরতরে মুছে যাবে। কিন্তু এ সৃষ্টিকর্ম হয়তো আমাকে পৃথিবীতে স্মরণীয় করে রাখলেও রাখতে পারে।
উলেখ্য, লেখিকার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘কুঁচকড়ি’ ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয় এবং ২০২২সালে পরিলেখ প্রকাশনা থেকে বইটি একুশে বইমেলায় এসেছে। ‘কুঁচকড়ি’ গল্পগ্রন্থের প্রতিটি গল্পের চরিত্রগুলোর মুখে রাজশাহী জেলার বাগমারা, মোহনপুরের আঞ্চলিক ভাষায় গ্রামীণ সমাজের বহুবিধ সমস্যা ফুটে উঠেছে। এ বইটিও বইমেলার ভুবন প্রকাশনীর ১২৮ নং স্টল থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
আরপি/যেডিএফ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: