রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


বনলতা নার্সিং ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন


প্রকাশিত:
১২ মে ২০২৩ ১৭:৩১

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১১:১১

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

‘আমাদের নার্স, আমাদের ভবিষ্যৎ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন করেছে বনলতা নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি ইনস্টিটিউট। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (১২ মে) সকাল আটটার দিকে নগরীর বহরমপুর মোড় নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে লক্ষ্মীপুর হয়ে ফায়ার সার্ভিস মোড়ে দিয়ে সিএনবি মোড় হয়ে আবার তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাসে শেষ হয়।

বনলতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোঃ বদর উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইনস্টিটিউটের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইমুম আহমেদ।



এছাড়া র‌্যালিতে অংশ নেন, সম্মানিত পরিচালক মোঃ বজলুর রহমান, বাকি চৌধুরী, জুয়েল রানা, তসলিম উদ্দিন, নিউট্রিশন ক্লাবের সভাপতি আরিফুল ইসলাম অনিক, সাধারণ সম্পাদক পিংকি খাতুন, ব্লাড ডোনেশন ক্লাবের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সম্পাদক মরিয়ম খাতুন, রিচার্স ক্লাবের সভাপতি আমিনুজ্জামান দ্বীপু, সম্পাদক সাদিয়া আফরিন ও জিনিয়া আক্তার রোজা, ডিবেট ক্লাবের সভাপতি হাজেরা, সম্পাদক জান্নাতুন মাওয়া, মিউজিক ক্লাবের সভাপতি মিষ্টি, সম্পাদক ফারিয়া সুলতানাসহ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ।

বনলতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোঃ বদর উদ্দিন বলেন, নার্সদের কর্মের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবার জন্য অতি জরুরি এবং রোগীদের নিকটতম স্বাস্থ্যকর্মী তারা। নার্সরা আমাদের সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দেন, তাই আমাদের জীবনে তাদের ভূমিকা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা চিন্তা করা দরকার।

তিনি বলেন, নার্সদের কঠোর পরিশ্রম, তাদের সেবা ছাড়া কোনো রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠা কঠিন। আজ সেই পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা জানানোর দিন। নার্সরা হাজারো কঠিন সময়ও নিজের জীবনের কথা ভুলে শুধু রোগীদের পাশে থেকেছেন। রাষ্ট্রিয়ভাবে তাদের মর্যাদা দরকার। সরকার যাতে করে এই ইন্সটিটিউটগুলোর দিকে লক্ষ রাখেন। সরকারিভাবে ক্রোড়পত্রের দাবি জানান এই অধ্যক্ষ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইনস্টিটিউটের সামনে তারা অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেন। এছাড়া দিনটি উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপন করেন নার্সরা। এরপর সাড়ে ১০ টার দিকে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে দিবসটিকে ঘিরে সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নার্সিং একটি আন্তর্জাতিক মহৎ পেশা। বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত রেজিস্টার্ড নার্সরা স্বাস্থ্যখাতে নিজেদের নিয়োজিত রাখছেন। বিশেষকরে করোনা মহামারি মোকাবিলা, শতভাগ ভ্যাকসিন প্রদানসহ দেশের যেকোনো সংকটকালে নার্সরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। করোনা রোগীর সেবা দিতে গিয়ে ৩৩ জন নার্স মৃত্যুবরণ করেছেন। আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ৬ হাজার নার্স। নার্সদের এই অসামান্য ও কঠোর পরিশ্রমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত আজ বিশ্বের দরবারে প্রশংসনীয়।

এতে আরও বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন রেজিস্টার্ড নার্স প্রয়োজন। বাংলাদেশে মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার নিবন্ধিত চিকিৎসকের বিপরীতে নার্স রয়েছে মাত্র ৭৭ হাজার ৮৩৮ জন। দেশের প্রেক্ষাপটে চিকিৎসকের অনুপাতে বর্তমানে নার্স থাকার কথা ৪ লাখ ৮ হাজার জন। কিন্তু দুঃখের বিষয় চিকিৎসকদের অনুপাতে নার্সের ঘাটতি ৩ লাখ ৩০ হাজার ১৬২ জন। এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সের সংখ্যা মাত্র ৪২ হাজার ৩৩০ জন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে ২৩ জন নার্স থাকার কথা। যদিও বাংলাদেশে এই সংখ্যা মাত্র ২ জন। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক নার্স দিবসের প্রতিপাদ্য ধারণ করে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে অধিক সংখ্যক নার্স নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসসহ বিভিন্ন নার্স সংগঠন। নার্সিং শিক্ষা ও এই সেক্টরকে আধুনিকায়ন করাসহ বিশেষ এই পেশায় নিয়োজিতদের সকল দাবি পূরণের দাবি জানিয়েছে তারা

উল্লেখ্য, আধুনিক নার্সিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের জন্মদিবসে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালন করা হয়। ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছোট বেলা থেকেই মানবসেবায় বিশেষভাবে উৎসাহী ছিলেন। আধুনিক নার্সিং পেশার রূপকার ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রতি বছর ১২ মে দিবসটি উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে দিবসটি পালন করে আসছে।

 

আরপি/ এমএএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top