রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


উত্তাল রাবি, ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা


প্রকাশিত:
১৩ মার্চ ২০২৩ ০৩:০৯

আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৩ ০৩:৩৪

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।

রোববার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেছেন। মামলার পর পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতার ব্যক্তির নাম- তসলিম আলী ওরফে পিটার (৪৫)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারের বাসের চেইন মাস্টার। নগরীর খোজাপুর এলাকায় তার বাড়ি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের জন্য বাসের চেইন মাস্টার তসলিমের বড় ভূমিকা আছে। মামলা হওয়ার পরে বিনোদপুর থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে।

এদিকে রোববার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছুসংখ্যক এলাকাবাসীর যে অপ্রীতিকর ঘটনা সংঘটিত হয়, তাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মর্মাহত। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, শনিবার সন্ধ্যায় বিনোদপুর গেট সংলগ্ন এলাকায় কতিপয় এলাকাবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং এতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। ঘটনার একপর্যায়ে পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপের ফলে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এলাকাবাসী ও পুলিশের কতিপয় সদস্যের এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। অনভিপ্রেত এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ দাবি জানাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের কাছে যেসব দাবি উত্থাপন করেছে, সে বিষয়ে উপাচার্য সংবেদনশীল এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে স্থানীয় মতিহার থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় বগুড়া থেকে মোহাম্মদ পরিবহনের একটি বাসে রাজশাহী আসছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন ইসলাম আকাশ। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়িচালক শরিফুল ও তার সহযোগী রিপনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আকাশের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাদের মধ্যে আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন আকাশসহ বিনোদপুর বাজারে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া রাবির কয়েক শিক্ষার্থীর সঙ্গে গাড়ির চালক, তার সহযোগী ও বাজারের ব্যবসায়ীর কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

খবর পেয়ে সেখানে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় ব্যবসায়ীরা তার মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন এবং ধাওয়া দিয়ে তাকেসহ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেন। এতেই ঘটনা বড় হয়ে যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন।

আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। তখন এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর রাতের অন্ধকারে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top