রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


সেশনজট কমাতে

রামেবিতে ‘বিশেষ রোডম্যাপ’, প্রশংসায় ভাসছেন উপাচার্য-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক


প্রকাশিত:
২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:২১

আপডেট:
২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০০:১২

রামেবি

সেশনজট কমাতে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (রামেবি) তৈরি করা হয়েছে ‘বিশেষ রোডম্যাপ’। তারই অংশ হিসেবে শুরু হয়েছে এমবিবিএস ও নার্সিং কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা। এছাড়া চিকিৎসক ও নার্সদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে গত মাসে নেদারল্যান্ডের ইরাসমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের। ফলে উচ্ছ্বসিত রামেবি অধিভূক্ত ৭৩টি কলেজের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী। এসব ভূমিকায় প্রশংসায় ভাসছেন রামেবি উপাচার্য প্রফেসর ডা. এজেডএম মোস্তাক হোসেন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ডা. আনোয়ার হাবিব।

রামেবি উপাচার্য প্রফেসর ডা. এজেডএম মোস্তাক হোসেন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ডা. আনোয়ার হাবিব। ফাইল ছবি

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রামেবির অধীনে সরকারি ও বেসরকারি মোট ৭৩টি কলেজে এমবিবিএস, বিডিএস, বিএসসি ইন নার্সিং (বেসিক ও পোস্ট বেসিক), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব ও ফিজিওথেরাপিস্ট) এবং ইউনানী হামদর্দ কোর্স চালু রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে ১৩টি করে ২৬টি। নার্সিং কলেজ সংখ্যা ৪৪। এরমধ্যে ৬টি সরকারি কলেজ। ইউনানী হামদর্দ কলেজ একটি ও আইএইচটি রয়েছে দুটি। ২০১৭-১৮ সেশন থেকে এ কোর্সগুলো রামেবি অভিভূক্ত হয়। এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এ কোর্স করার সুযোগ ছিল।

সূত্রমতে, রামেবির অধীনে এমবিবিএস কোর্সে অধ্যায়নরত রয়েছেন সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী। ২৬ টি মেডিকেল কলেজের শুধুমাত্র ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২ হাজার ৫৪৫। তবে বিএসসি ইন নার্সিং বেসিক ও পোস্ট বেসিক কোর্সের ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ এ তিন সেশনের মোট শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩ হাজার ৩১৩ জন।

সূত্র জানায়, নিয়োগের পর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা পদ্ধতি ও গ্রহণের দিকে বিশেষ নজর দেন রামেবি উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। সেশনজট কমাতে সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন ও কলেজসমূহের অধ্যক্ষদের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিংয়ের পর তৈরি করেন ‘বিশেষ রোডম্যাপ’। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বিএসসি ইন নার্সিং বেসিক ও পোস্ট বেসিক এবং ১৮ ডিসেম্বর থেকে এমবিবিএস পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে। আজ বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে বিডিএস পরীক্ষা। আর ইউনানী হামদর্দ কোর্সে পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে। কোডিং-ডিকোডিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল। আগামী ১৩ মার্চ থেকে এমবিবিএস ও মে মাসে নার্সিংয়ের পরবর্তী ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হবে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

তথ্যমতে, চিকিৎসক ও নার্সদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণের জন্য গত ২৩ নভেম্বর নেদারল্যান্ডের ইরাসমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধিদল রামেবিতে এসে চুক্তি স্বাক্ষর করে। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও নার্সদের বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণ ও গবেষণা, স্নাতোকত্তর কোর্সসমূহের পড়ালেখা ও থাকার সুযোগ সৃষ্টি, টেকনোলজিতে দক্ষ এবং মানবসম্পদ বিনিময় ব্যবস্থা করার মতো এজেন্ডা রয়েছে এ চুক্তিতে। চুক্তি অনুযায়ী, গত মাসেই সিরাজগঞ্জে ১৬ জন নার্সকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইরাসমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল। আগামীতে নেদারল্যান্ডে স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগও পাবেন এখানকার নার্স ও চিকিৎসকরা।

দ্রুত পরীক্ষা গ্রহণে হিমশিম খেতে হলেও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ডা. মো. আনোয়ার হাবিব বলেন, করোনার প্রভাবে কিছুটা পিছিয়ে যেতে হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে রোডম্যাপ তৈরির মাধ্যমে সেশনজট দূরীকরণে কার্যক্রম শুরু করেছি। শিক্ষার্থীদের দিকে খেয়াল রেখেই আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সেজন্য একসঙ্গে চলমান রয়েছে ৬৫ কেন্দ্রে এমবিবিএস ও নার্সিং পরীক্ষা।

এ ব্যাপারে রামেবি উপাচার্য প্রফেসর ডা. এজেডএম মোস্তাক হোসেন বলেন, এমবিবিএস কোর্সে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অলরেডি ৬ মাস এগিয়ে আছি আমরা। সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে একাডেমিক সব জটিলতা নিরসন হবে। নেদারল্যান্ডের ইরাসমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের চুক্তিও হয়েছে। এতে নার্সিং শিক্ষা ব্যবস্থার বিশেষভাবে ইমপ্রুভ হবে। তাত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি প্র্যাকটিক্যালি প্রশিক্ষিত হবে এখানকার নার্সরা। স্কলারশিপে তাদের বিদেশ পাঠিয়ে উচ্চশিক্ষা দেয়ার ব্যপারেও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top