রমজান ঘিরে নাগালের বাইরে নিত্যপণ্যের দাম
পবিত্র মাহে রমজান আসার কয়েক দিন বাকি থাকতেই হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। বিশেষ করে রমজানের অতি প্রয়োজনীয় ছোলা, সব রকমের ডাল, বেসন, খেজুরসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাত্রাতিরিক্ত দাম বৃদ্ধিতে বেকায়দায় পড়েছেন শ্রমজীবি ও অল্প আয়ের মানুষরা।
রোববার (৩ মার্চ) রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা দোকান সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাসখানেক আগেও প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে সেই ছোলার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ থেকে ১১৫ টাকায়। ছোলার ডালও কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। খুচরায় খেসারির ডাল প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগেও ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকার মধ্যে। আর চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি দরে।
দেশে বর্তমানে রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে মুগ ডাল। এক মাসের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মুগ ডালের। কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়ে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই ডাল। নতুন বা সাদা জাতের ছোলা মানভেদে প্রতি কেজি ১১৬ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, এলসি জটিলতাসহ নানা কারণে এবার আমদানি ব্যয় বেড়েছ অনেকটাই। আর তাই আমদানি করা এসব পণ্যের দামও বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
একজন ক্রেতা বলেন, প্রতিবছরই রোজা শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগে থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ছোলাসহ রোজার বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা। অন্যান্য দেশগুলোতে রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমে, আর বাংলাদেশে তার উল্টো।
আমিনুল ইসলাম নামের এক রিক্সা চালক বলেন, আমি প্রতি দিন রিক্সা চালিয়ে যা ইনকাম করে সেই টাকা দিয়ে আমার পরিবার চালানো খুব কষ্ট হয়। আমাদের জীবন টা অনেক কষ্টের আমরা চাইলেই অনেক কিছু খেতে পাবি না। আর এখন যে পরিমানে বাজারের দাম বাজার করতে গিয়ে কোনটা নিবো সেটাই বুঝতে পারি না। তাও পরিবারের মুখের দিকে তাকিয়ে বাজার দাম বেশি তাও কিনতে হয়।
এদিকে খুচরা বাজারে জাতভেদে সব ধরনের খেজুরের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। দাবাস ও তিউনিসিয়ান জাতের মতো সাধারণ মানের খেজুরও এখন প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মরিয়ম খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে।
জানতে চাইলে খেজুর বিক্রেতা আলাউদ্দিন বলেন, বিশ্ববাজারে খেজুরের দাম না বাড়লেও ঋণপত্র (এলসি) খোলায় জটিলতা, আমদানি শুল্ক ব্যাপক হারে বৃদ্ধি ও ডলারের সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে খেজুর আমদানিতে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। যার ফলে দেশের বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুর।
তবে আগের মতোই সয়াবিন ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, চিড়া ৬০ টাকা, মুড়ি ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে।
মুদি দোকানী ফরিদ মিয়া বলেন, বাংলাদেশের বাজারে কোনো কিছুর দাম বাড়লে সেটি আর কমতে চায় না, যেমন বাদামের দাম শুধু বাড়তেই আছে, কমার কোনো নাম নেই।
আরপি/এসআর
বিষয়: বাজার দর কাঁচাবাজার রমজান
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: