রাজশাহী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


‘ছেলে আমাকে খেতে দেয় না, কিছু বললেই শুধু মারে’


প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২০ ১৭:০৫

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ১৫:৪৩

 

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। ছেলের অত্যাচার সইতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে বর্তমানে ওই বৃদ্ধ অন্যের জমিতে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘর করে বসবাস করছেন। খাওয়া-নাওয়া চলছে প্রতিবেশীর বাড়িতে।

গত এক সপ্তাহ ধরে এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই বাবা। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৫নং শিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নের বড়শিমলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই বৃদ্ধের নাম আবজাল গাজী। পাঁচ বছর আগে তার ছেলেরা তার স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি লিখে নিয়েছে।

বাড়ি ছাড়ার এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুরে বৃদ্ধ আবজাল গাজী অন্যের সহযোগিতায় কালীগঞ্জ থানায় ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বৃদ্ধের স্ত্রীও বাড়ি ছেড়ে একমাত্র মেয়ের বাড়ি বসবাস করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃদ্ধ আবজাল গাজীর তিন ছেলে এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকায় বেশ কয়েক বছর আগে। তিন ছেলে বিদেশ করেছেন। এর মধ্যে মেজ ছেলে রবিউল ইসলাম গাজী মারা গেছেন। ছোট ছেলে বাবুল গাজী এখনও প্রবাসে। বড় ছেলে রফিক গাজী প্রায় আট বছর হলো প্রবাস থেকে ফিরে এখন বাড়িতে। এই রফিক গাজীর বিরুদ্ধে নিজ কন্যা সন্তানকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

বৃদ্ধ বাবা আবজাল গাজী বলেন, ছেলে আমাকে খেতে দেয় না, কিছু বললেই শুধু মারে। প্রায়ই আমাকে ধরে ধরে মারে। এক সপ্তাহ আগেও বড় ছেলে রফিক আমার বাম চোয়ালে জোরে চড় মারে। এরপর বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীদের পরামর্শে বাড়ি ছেড়ে গ্রামের সম্পর্কে এক বোনের জমিতে একটি চালা তৈরি করে সেখানেই থাকছি।

তবে অভিযুক্ত ছেলে রফিক গাজী বলেন, আমার বাবা আমার কথা শোনেন না। তিনি তার মত করে চলতে চান। যে কারণে মতের অমিল হওয়ায় সম্প্রতি তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

জমি লিখে নেয়ার বিষয়টি আস্বীকার করে তিনি বলেন, সব জমি অন্যের কাছ থেকে কেনা।

তাদের প্রতিবেশী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হযরত আলী বলেন, বৃদ্ধ আবজাল গাজীকে প্রায়ই তার বড় ছেলে রফিক গাজী নির্যাতন করে। ঠিক মতো খেতে দেয় না।

এ নিয়ে সামাজিকভাবে অনেকবার সালিশ হয়েছে, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। এখন আবজাল গাজী প্রতিবেশী এক বোনের জমিতে চালা তুলে বসবাস করছেন। এ ঘটনায় আমার সহযোগিতায় তিনি কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, আমি থানায় ছিলাম না। বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূবর্ণা রাণী সাহা জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

 

আরপি/এমএএইচ-০৮

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top