রাজশাহী সোমবার, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫শে ভাদ্র ১৪৩১


হাত নেই, পা দিয়েই আলিম পরীক্ষা দিচ্ছেন হাবিবুর


প্রকাশিত:
৭ নভেম্বর ২০২২ ০৫:৫৮

আপডেট:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৫:৪১

ছবি: সংগৃহীত

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আটকে রাখতে পারেনি হাবিবের মেধাকে। পা দিয়ে লিখেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সে ধারাবাহিকতায় এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। এ হার না মানা শিক্ষার্থীর বাড়ি রাজবাড়ি জেলার কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হেমায়েত খালী গ্রামে।

জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. হাবিবুর রহমান (১৯) একই গ্রামের দরিদ্র কৃষক মো. আ. সামাদের একমাত্র ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে হাবিব তৃতীয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অদম্য মেধাবী হাবিবুর রহমানের দুই হাত নেই। সে প্রথমে তার গ্রামের হেমায়েত খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। পরে ২০১৫ সালে পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে ৪.৬৩ নাম্বার নিয়ে জেএসসি পরীক্ষায় পাশ করে। এরপর ২০১৮ সালে দাখিল পরীক্ষায় ৪.৬১ নাম্বার নিয়ে পাশ করে। এবার একই মাদরাসা থেকে পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদরাসা (কেন্দ্রে) আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।

হাবিবুর রহমানের বড় দুলাভাই (ভগ্নিপতি) আনোয়ার হোসেন বলেন, হাবিব জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী তার দুটি হাত নেই তবে সে অত্যন্ত মেধাবী এবং ভালো ছাত্র। তার ভিতরে অনেক প্রতিভা এবং আত্মবিশ্বাস রয়েছে। সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে চায়।

পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক, মো. হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, হাবিব আমার মাদরাসা অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র, সে প্রতিটা ক্লাসেই ভালো করে আজকে আলিম পরীক্ষা দিতে আসছে, সে আমাদের মাদরাসা এবং দেশের গর্ব। তাকে নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী, তবে তার পরিবার দরিদ্র। সমাজের বিত্তবান ও সরকারের পক্ষ থেকে তার পাশে এসে দাঁড়ালে হয়তো সে আরো ভালো কিছু করতে পারবে।

মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাই। বাবা মা ও সকলের দোয়া নিয়ে আমি একদিন ভালো কিছু করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

এবিষয়ে পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও চলমান আলিম পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওয়াবুল্লাহ ইব্রাহিম বলেন, জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী হাবিবুর রহমান আমার তত্ত্বাবধানে এই কেন্দ্রেই জেএসসি এবং দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে ও চলমান আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে। তার দুটো হাত না থাকলেও তার পায়ের লেখনী দ্বারা বোঝার উপায় নেই যে সে প্রতিবন্ধী। তবে শুনেছি সে অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান। সাহায্য সহযোগিতা পেলে হয়তো সে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

সূত্র: ঢাকা মেইল

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top