রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


গুচ্ছের পক্ষে কথা বলায় জবি শিক্ষককে হেনস্তা


প্রকাশিত:
৭ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২৪

আপডেট:
৭ এপ্রিল ২০২৩ ১০:৩৮

ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে থাকা-না থাকা নিয়ে দ্বিমতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) জবি উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে ৬৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভা চলাকালীন মারধরের এ ঘটনা ঘটে।

একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সভায় গুচ্ছে থাকা-না থাকা উভয় মতের শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। গুচ্ছে না থাকতে চাওয়া শিক্ষকরা সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিতে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ ইউনিট কমিটি গঠন করতে উপাচার্যকে চাপ প্রয়োগ করছিলেন। ওই সময় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের গুচ্ছে না থাকার কারণ জানতে চান এবং বলেন গুচ্ছে আসার সময় আমরা সর্বসম্মতিক্রমে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে গুচ্ছে আসছি। এখন গুচ্ছ থেকে বের হতে হলেও সেসব প্রসিডিউরে যেতে হবে।

পরে তাকে কথা বলতে বাধা দিয়ে থামিয়ে দেন গুচ্ছে থাকতে না চাওয়া শিক্ষকরা। ওই সময় তিনি টেবিলে থাপ্পড় দিয়ে বলেন, আমাকে কথা বলতে না দিলে সভা হতে পারে না। এরপরই সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ অন্য শিক্ষকরা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের গায়ে হাত দেন। পরে তিনি সভা ছেড়ে চলে যান।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও, সে একজনও যদি হয়, তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব। একাডেমিক কাউন্সিল সভায় আমি একটু ভিন্ন মত দিয়েছি, ন্যায্য কথা বলেছি বলেই এত শিক্ষকের মাঝে আমার গায়ে হাত তুলেছে। এ বিষয়ে আমি আইনি প্রক্রিয়ায় যাব। আইন বলতে তো ফৌজদারি আইনই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনও তো আছে।’

ওই সভায় উপস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, আমি বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে রাজি না। শুধু এটুকু বলব- ভালো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

যদিও সভায় মারধরের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ‘এখানে মারামারির ঘটনা ঘটেনি। সে (অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের) খুব উত্তেজিত ছিল। বসতে বলার পরও বসতে চাচ্ছিলেন না। কয়েকজন তার ঘাড়ে চাপ দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে। আর বিষয়টা মিটমাট হয়ে গেছে। আমরাও দুঃখপ্রকাশ করেছি, সেও স্যরি বলেছে।’

সার্বিক বিষয়ে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে আমাদের সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটবে তা কাম্য ছিল না। শিক্ষকদের এমন ঘটনা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এর জন্য আমি লজ্জিত, মর্মাহত।

গুচ্ছ ভর্তির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, জগন্নাথ নিজেদের সর্বসম্মতিক্রমে ও সরকারের সিদ্ধান্তে গুচ্ছে আসছে। শিক্ষামন্ত্রী যেহেতু বলেছে, আগামী বছর থেকে বুয়েট-ঢাবিসহ সবার একসঙ্গে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হবে। আমরা একটা সেশন অপেক্ষা করতে পারতাম। পরেরবার ঢাবি-বুয়েট না আসলে আমরা সহজেই সরে আসতে পারতাম। এ নিয়ে এত কাহিনী, মারামারি দরকার হতো না।

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top