বাগমারায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
রাজশাহীর বাগমারায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আতিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার (এলএসপি) পদে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। উক্ত ইউনিয়নে ১৪টি পদের বিপরীতে প্রায় শতাধিক আবেদনকারী এলএসপি পদে গত ১ সেপ্টম্বর ২০১৯ তারিখে লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে।
অনুষ্ঠিত সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ২ সেপ্টম্বর লিখিত ওই পরীক্ষা বাতিল করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম। পরে ২ তারিখে পুনরায় লিখিত পরীক্ষা নেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সেই পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে উত্তীর্ণ হয় ৭৪ জন। পরে সেদিনই মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেই পরীক্ষায় মেধাক্রমের ভিত্তিতে ৪১ জন চূড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ হয়।
সেই মেধাক্রম অনুযায়ী উক্ত পদে নিয়োগ চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও তা মানেন নি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে ২৫-৪৫ বছরের মধ্যে যাদের বয়স কেবল তারাই আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু সেটা না মেনে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে নিজের পছন্দ মতো প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করতে চলেছেন। এদের কেউ কেউ মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণও নেননি বলে জানাগেছে। যার মধ্যে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২৫ বছরের নিচে বয়সও আছে। তাছাড়াও সজনপ্রীতির মাধ্যমে অনেক জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাদের স্বামী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত আছেন।
নিয়োগ পরীক্ষাকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম বলেন, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক প্যানেল অনুযায়ী নিয়োগ পাওয়ার কথা। সে মোতাবেক লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় মেধাক্রম অনুসারে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সে ভাবে নিয়োগ দেয়ার কথা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সেটা না মেনে মেধা তালিকার ২য় এবং ৩য় এমন অনেক জনকে নিয়োগ দানের লক্ষ্যে চূড়ান্ত তালিকা হেড অফিসে প্রেরণ করেন। সেই তালিকা অনুযায়ী ১৬ অক্টোবর উক্ত পদে নিয়োগের সকল কার্যক্রম শেষ করে যোগদান করাবেন।
এদিকে নিময় না মেনে অন্যায় ভাবে চূড়ান্ত নিয়োগ তালিকা বাতিল করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে প্যানেল অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন মেধা তালিকায় প্রথমে থাকা প্রার্থীরা। অবিলম্বে তদন্ত করে ভূয়া নিয়োগ বাতিল করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও দাবী জানান তারা।
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষার ইউএনওর প্রতিনিধি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এলিজা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় মেধাক্রম অনুসারে প্যানেল আকারে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ১ম থেকেই নিয়োগ দেয়া হবে। কেউ যদি না করতে চায় তাহলে ২য় জন নিয়োগ পাবেন এটাই নিয়ম। কেন সেটা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মানছেন না তা আমার বোধগম্য নয়।
অন্যদিকে নিয়োগ কমিটির সদস্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান জানান, মেধা তালিকা মোতাবেক ১ম থেকে নিয়োগ দিতেই প্যানেল আকারে তালিকা প্রকাশ করে তা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। ১ম মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থীদের না জানিয়ে অন্য কাউকে নিয়োগ দিতে পারে না উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকপ্লের সদস্য সচিব, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আতিবুর রহমানের সাথে মূঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তথ্য গোপন করেন। সেই সাথে মোবাইলের মাধ্যমে কোন কথা বলবেন না বলে কল কেটে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কেন নিয়ম অমান্য করছেন সেটা তদন্ত করে দেখা হবে।
আরপি/এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: