রাজশাহী বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১

চারঘাট ডাক বিভাগ: যেন কোথাও কেউ নেই


প্রকাশিত:
৪ অক্টোবর ২০২০ ০৬:০৩

আপডেট:
৪ অক্টোবর ২০২০ ০৬:০৪

চারঘাট ডাক বিভাগ

একযুগ বা তারও আগে মানুষের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল ডাক বিভাগ। সরকারি বা বেসরকারি কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ হতো পত্রের মাধ্যমে। আবার ভালোবাসার নান্দনিক শব্দ মিশ্রিত রং-বেরঙের প্যাডের পাতা ভরে প্রেমিক-প্রেমিকা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করত পত্রের মাধ্যমে। আর হলুদ খামসহ রং-বেরঙের খামে ভরা এসব পত্র দেশ বা বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে ডাক বিভাগের মাধ্যমে বাহকের হাতে পৌঁছত।

ডিজিটাল তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে জৌলুসভরা ডাক বিভাগের সেই জৌলুস সময়ের ব্যবধানে হারিয়ে যেতে বসেছে। চিঠির ঝুলি কাঁধে হেলে-দুলে চলা ডাকপিয়নের কদর আর চোখে পড়ে না। সময়ের প্রয়োজনে গুরুত্ব হারিয়েছে ডাক বিভাগের হাঁক-ডাক, তাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে ডাকবাক্সও। বিভিন্ন বাজার বা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো ডাকবাক্স আর চোখে পড়ে না। দু’একটির দেখা মিললেও নিয়মিত না খোলায় তাতে ঝুলানো তালায় মরিচা পড়ে জরাজীর্ণ অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।

সারা দেশের মতো রাজশাহীর চারঘাট ডাক বিভাগের চিত্রও একই। চারঘাটে ১৪টি সাব- ডিজিটাল ডাকঘরের মাধ্যমে ৬ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায় ২ লাখ মানুষের ডাকসেবা ও সব সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও তথ্যপ্রযুক্তির জাঁতাকলে বাধা পড়ে তা থেকে প্রায় বঞ্চিত রয়েছেন সবাই। আবার যারা ডাক বিভাগের দায়িত্বে আছেন তাদেরও রয়েছে দায়িত্বহীন কর্মকর্তা ও অবহেলা।

চারঘাট ডাক বিভাগের জন্য অফিস বরাদ্দ থাকলেও সেসব অফিস এখন ভিন্ন কাজে ব্যবহার হচ্ছে। একই সাথে সাব-পোস্টঅফিসগুলোতে তিনজন স্টাফ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তার দেখা মেলেনি। ‘কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’- এমন অবস্থা। ফলে ওই সব ডাকঘরে রক্ষিত প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, কম্পিউটার, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিসহ অফিসিয়াল সরকারি কাগজপত্র অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে, যা দেখার কেউ নেই।

আবার কোথাও দু’একটি জরাজীর্ণ ডাকবাক্স চোখে পড়লেও খোলার অভাবে ভেতরে থাকা চিঠিপত্র ভেতরেই রয়ে যায় পৌঁছায় না বাহকের কাছে। বেকার যুবকরা চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র চাকরি প্রার্থীদের হাতে পৌঁছায় না। যদি দু’একটি পৌঁছায় তাও পরীক্ষার তারিখ অতিবাহিত হওয়ার পর। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

চারঘাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে। চারঘাট ডাক বিভাগের বেহাল দশার বিষয়ে চারঘাট উপজেলা পোস্টমাস্টার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডিজিটাল ডাকঘর গুলো দেখাশোনার দায়িত্ব আমার না। এগুলো পরিদর্শন করা জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছে।

এ অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা ডাকঘর পরিদর্শক ইজাজুল হক বলেন, চারঘাট উপজেলার ডাকঘর গুলো নিয়মিত পরিদর্শন করা হয়। তাদের সার্ভিসও ভাল। তারপরও যদি অনিয়ম থাকে, তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে ডাক বিভাগের হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এমন দাবি সেবাপ্রত্যাশীসহ চারঘাটবাসীর।

 

আরপি/এমএএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top