রাজশাহী মঙ্গলবার, ৭ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১

বাঘায় নদী ভাঙনের শঙ্কায় গো-খাদ্য হিসাবে কাঁচা ধান


প্রকাশিত:
১৫ জুলাই ২০২০ ২৩:৪৬

আপডেট:
৭ মে ২০২৪ ০১:০৬

গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে কাটা হচ্ছে কাঁচা ধান

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মা নদীর ভাঙনের ভয়ে গরু ও গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে কাঁচা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মার মধ্যে কালিদাসখালী মাঠে ফজল শেখ নামের কৃষককে এই ধান কাটতে দেখা গেছে।

ফজল শেখ জানায় কালিদাসখালী মাঠে ৬ বিঘা জমি ছিল। এর মধ্যে ভাঙতে ভাঙতে সবগুলো রাক্ষুসে পদ্মা গিলেছে। আর মাত্র ১০ কাঠার মতো জমি ভাঙতে বাঁকি রয়েছে। এই জমিতে সে আমন ধান রোপন করেছি সেই ধানের বুকে থোড় এসেছে। পদ্মার ভাঙনে তো জমি চলেই যাচ্ছে, কাঁচা ধান কেটে নিয়ে গেলে অন্তত গরুকে খাওয়ানো যাবে। এছাড়া তার বাড়িটাও ভাঙন থেকে ৩০০ মিটার দুরে অবস্থান করছে। তাই বাড়িটাও অন্যত্রে সরে নিয়ে যেতে হবে। তার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৫ জন। জমি ছিল ৬ বিঘা। পদ্মায় ভাঙনে ভাঙতে সব জমি পদ্মা নদীতে চলে গেছে। এখন কথায় যাবে ভেবে পাচ্ছে না। এদিকে তার ৪টি গরু ও ৬ টি ছাগল রয়েছে। এগুলো নিয়ে চিন্তায় পড়েছে।

পদ্মার মধ্যে ১৫টি চরের আয়তন ৪৬ কিলোমিটার। জনসংখ্যা সাড়ে ১৫ হাজার। জমির পরিমান ৬ হাজার একর। মানুষের বসবাস প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। আমান ধান চাষ হয়েছে ১০০ হেক্টর। ফজল শেখের মতো আরো অনেক কৃষক কাঁচা ধান গো-খ্যাদ্যের জন্য কেটে নিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

ফজল শেখ বলেন, ভাঙতে ভাঙতে সব জমি চলেই গেল পদ্মায়। অবশেষে কাঁচা ধানগুলো কেটে নিয়ে গেলে গরুকে খাওয়ানো যাবে। তাই ধান কাটছি। বাবারে আমরা জীবন বাজি রেখে চরে বসবাস করি। নিজের যতোটুকু জমি ছিল, সবটুটু ভাঙনে চলে গেল। এখন নিরুপায় হয়ে পড়েছি। কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছিনা, এখন কথায় যাবো চিন্তায় আছি। নিজের আর জমিও নেই।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর (কালিদাসখালী) শহিদুল ইসলাম বলেন, এই ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক পরিবার বসবাস করতো। পদ্মার ভাঙনের কারনে গত বন্যায় ও এবারের বন্যায় প্রায় দুই শতাধিক পরিবার অন্যত্রে চলে গেছে। এছাড়া ১০-১৫ বছর আগে রোপন করা আম গাছসহ কয়েক শত বিঘা জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। এই ওয়ার্ডে একটি মাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দুই দিন আগে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। তবে বিদ্যালয়ের মামলামাল টেন্ডারে বিক্রি করা হয়।

কালিদাসখালী চরের এক স্কুল শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, নদীর এপাড় ভাঙে ওই পাড় বাধে এটাই সত্য। গত কয়েক বছরের চর ভাঙতে ভাঙতে হাজার হাজার একর আম বাগানসহ ফসলী জমি পদ্মা গর্ভে চলে গেছে। ইতিমধ্যে চকরাজাপুর মোজার চিহৃ হারিয়ে গেছে। কালিদাসখালী চরের তিন ভাগের দুই ভাই হারিয়ে গেছে। তবে ভাঙনের ভয়ে অনেকই কাঁচা ধান গো-খাদ্যের জন্য কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, ভাঙনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

আরপি/ এএন-৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top