বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
৬ কোটি ৬৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে (বিএমডিএ) ৬ কোটি ৬৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ে অধীনে পরিচালিত এ সংস্থার ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে অডিটের গড়মিলের মাধ্যমে টাকা আত্বসাত করা হয়েছে বলে জানায় দুদক।
বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) বাবদ এ বাড়তি টাকা ফেরত দিতে সংশ্লিষ্ট ৭৩ ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু, এখনো বেশির ভাগ কর্মকর্তাই টাকা ফেরত দেন নি বলে জানান বিএমডিএ’র অডিট অফিসার শ্রী বাসুদেব চন্দ্র মহন্ত।
বিএমডিএ’র এ আত্বসাতের অভিযোগসমূহের মধ্যে:
১.নিজেদের ইচ্ছেমতো টাইমস্কেল নির্ধারণ করে অতিরিক্ত বেতন নেয়া।
২.বাণিজ্যিক দামে বিদ্যুৎ কিনে তা আবাসিক দরে সরবরাহ।
৩.বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের বাসায় আবাসিক হিসেবে ব্যবহার।
৪.জোন কার্যালয় ভবনের তৃতীয়তলায় সহকারী প্রকৌশলীদের বাসা নির্মাণ।
৫.নিয়ম ভেঙে ৭৩জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট প্রদান।
৬.নানা অনিয়ম ধরা পড়েছে বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
৭.ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে সরকারি নিয়ম না মানা।
৮.পিপিআর লঙ্ঘন, অবৈধ কেনাকাটা করাসহ মোট ২৪ টি খাতে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।
এসব দুর্নীতি ঢাকতে প্রতিবছরই কেটে নেয়া হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের টাকা।
তবে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, অডিটে গড়মিল হলেও কোথাও কোনো দুর্নীতি হয় নি।
বিএমডিএ’র সহকারী হিসাব রক্ষক মতিউর রহমান বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তারা ইচ্ছেমতো নিজেদের টাইমস্কেল ও ইনক্রিমেন্ট বাড়িয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনা ঘটেছে অন্তত তিন দফা। এ নিয়ে নোটশীট দিলেও তা আমলে নেননি নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ।
দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের রাজশাহী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন জানান,গত ৫ সেপ্টেম্বর দুদকের অনুসন্ধান দল বিএমডিএ’র প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে কাগজপত্র তলব করে। দুদকের ২৪টি খাতে তারা দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দুদকের কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
তবে দুদকের অনুসন্ধানকে উড়িয়ে দিলেও বাড়তি ইনক্রিমেন্টের টাকা ফেরত দিতে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে স্বীকারও করেছে বিএমডিএ’র অডিট অফিসার শ্রী বাসুদেব চন্দ্র মহন্ত। কিন্তু এখনো বেশির ভাগ কর্মকর্তাই টাকা ফেরত দেন নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
এসব দুর্নীতি ধামাচাপা দেয়ার কথা বলে অডিট কর্মকর্তাদের নামে প্রতি বছরই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন থেকে কেটে নেয়া হয় মোটা অংকের টাকা। এই ঘুষ বন্ধে বিএমডিএ’র ভূক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২০১৫ সালেই চিঠিও দিয়েছেন বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে।
তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদ। তিনি বলেন, অডিট আপত্তিগুলো ধীরে ধীরে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। আর যেগুলো ভুলত্রুটি আছে সেগুলো শুধরে নেয়া হবে।
আরপি/এমএইচ
আরপি/এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: