রাজশাহী সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১

বাঘায় পদ্মার গ্রাস থেকে রক্ষায় স্কুল ভবনটি টেন্ডারে বিক্রি


প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২০ ০০:৪৩

আপডেট:
২ জুলাই ২০২০ ০০:৪৬

চর কালিদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চর কালিদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনটি পদ্মার করালগ্রাস থেকে রক্ষার জন্য অবশেষে উম্মুক্তভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে।

প্রথম ও দ্বিতীয়বার সরকারি মূল্য বেশি হওয়ায় টেন্ডারে কেউ সাড়া দেয়নি। তবে তৃতীয়বার সরকারি মুল্য কম করে অবশেষে মঙ্গলবার (৩০ জুন) উম্মুক্তভাবে ঠিকাদাররা টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে ক্রয় করেন।

জানা যায়, বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মার চরের মধ্যে চর কালিদাসখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৮৩ সালে স্থাপিত হয়। প্রায় ২৬ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৯৯৮ সালে প্রথমে একতলা এবং ২০১১ সালে দ্বিতলা ভবন নির্মান করা হয়। পদ্মা নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবনটি পদ্মা নদী থেকে ৩০ মিটার দুরে অবস্থান করছে।

এটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী, শিক্ষা অফিসার, কৃষি অফিসার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের নির্দেশ দেন এবং বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনটি উম্মুক্ত টেন্ডারের দিয়ে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে টেন্ডার আহবান করা হয়।

প্রথমবার ১৫ জুন এবং দ্বিতীয়বার ১৯ জন স্কুল ভবনের সরকারি ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করে উম্মুক্ত টেন্ডার আহবান করা হয়। কিন্তু সরকারি মুল্য বেশি হওয়ায় কোন ঠিকাদার এই উম্মুক্ত টেন্ডারে অংশ গ্রহন করেনি। পরে তৃতীয়বার সরকারি মূল্য কম করে ২ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করে উম্মুক্ত টেন্ডারের আহবান করায় ভবন বিক্রি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, আমরা সরেজমিন করে সরকারি বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে টেন্ডারের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। মূল্যে বেশি হওয়ায় কোন ঠিকাদার টেন্ডারে অংশগ্রহন করেনি। ফলে তৃতীয়বার সরকারি মূল্য কম করে পূনরায় তারিখ নির্ধারণ করে টেন্ডারের আহবান করে সেটি বিক্রয় হয়েছে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকার কারণে এমন অবস্থা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকলে আরো বেশি দামে ভবনটি বিক্রি হতো।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবিএম সানোয়ার হোসেন বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয়বার ঠিকাদাররা সবাই ওই ভবন টেন্ডার নেয়ার জন্য এসেছিল। কিন্তু তারা ডাক না দিয়ে চলে গেছে। পরে সরকারি মুল কম করে দেয়ার টেন্ডারে বিক্রি করা হয়েছে। এটি না হলে ভবনটি চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়টির মতো পদ্মা গর্ভে চলে যেত।

চরকালিদাসখালী সরকারি প্রাইমারী স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা পারভীন বলেন, এই বিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ২০৯ জন। পদ্মা নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে স্কুলের ভবনের নিকট চলে এসেছে। বিষয়টি প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অবহিত করার পর স্কুলটি স্থানান্তর ও ভবন টেন্ডারে বিক্রি হয়েছে। তবে স্কুলটি কালিদাসখালী মৌজার মধ্যে দুই কিলোমিটার পূর্ব দিকে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিজুল আযম বলেন, চর কালিদাসখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির ৭ কক্ষ বিশিষ্ট ভবন পদ্মার ভাঙন থেকে ৩০ মিটার দুরে অবস্থান করছে। ভবনটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রয় করায় সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা পড়েছে। বিদ্যালয়টি অন্যত্র স্থানান্তর করায় হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, নদী ভাঙন ও বন্যার পরিস্থিতি বুঝে টেন্ডারের সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রথমবার ও দ্বিতীয়বার কেউ টেন্ডার অংশগ্রহনে এগিয়ে আসেনি। তৃতীয়বার পূর্ণমূল্য নির্ধারণ করে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে। 

আরপি/ এএন-১০



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top