রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

বাঘায় স্কুলের পুরাতন ভবন মেয়াদের আগে টেন্ডারে বিক্রি, নতুন ভবন বরাদ্ধ


প্রকাশিত:
২৯ জুন ২০২০ ০১:৩০

আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৫৯

ছবি: চকছাতারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকছাতারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে উম্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। বিদ্যলয়ের শ্রেণি কক্ষের স্বল্পতার কারনে নতুন ভবনের আবেদন করা হয়। নতুন ভবন নির্মানের অনুমতি আসলে, সেই পুরাতন ভবন টেন্ডারের মাধ্যমে দেয়া হয়।

জানা যায়, উপজেলার চকছাতারী সরকারি প্রাখমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলটি শিক্ষানুরাগী আবদুর রহমান, বয়েজুল ইসলাম খান, মসলেম উদ্দীনসহ স্থানীয়রা ১৯৯৯ সালে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য প্রাইমারী স্কুলটি প্রতিষ্টা করেন। ২০০২-২০০৩ অর্থ বছরে ৭ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সাড়ে ৩ কক্ষ বিশিষ্ট একতলা একটি ভবন নির্মান করে।

পরে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৪ তলা ফাউন্ডেশনে এক তলা বিশিষ্ট ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুন আরেকটি ভবন নির্মানের অনুমতি হয়েছে। এ দিকে মাত্র ১৭ বছর আগের নির্মিত ভবনটি নতুন ভবন করার জন্য পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। ২ লক্ষ ১৬ হাজার টাকায় উম্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। তবে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অর্থ লোপাট হচ্ছে সরকারের।

এ বিষয়ে স্কুলের সদস্য রুহুল আমি বলেন, এলাকায় এই স্কুল ছাড়া আর কোন জায়গা নেই। এলাকার কেউ মারা গেলে এই স্কুল মাঠে জানাযা করতে হয়। দুই ঈদে নামাজও পড়ে স্থানীয়রা। স্কুল ভবনের পাশে আরেকটি ভবন নির্মান করা হলে মাঠ আর থাকবে না। এছাড়া শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার বিকাশও ঘটবে না। এই চিন্তা থেকেই কর্তৃপক্ষের কাছে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন করার দাবি করা হয়।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি পক্ষ দাবি করেন এক বিঘা জমির উপর স্কুলটি। নির্মানকৃত পুরাতন ভবনটি ভাল রয়েছে। এই ভবনটি রেখে আরেকটি ভবন নির্মান করা হলে শিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পাঠদান করতে পারবে এবং শ্রেণি কক্ষের সমস্যা থাকবে না। ওই ভবন ভেঙ্গে একই জায়গায় করা হলে আগের মতোই শ্রেণি কক্ষের সংকট থাকবে। শ্রেণি কক্ষ সংকটের কারনে ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, কক্ষের স্বল্পতার কারনে নতুন ভবনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন ভবনের অনুমতি এসেছে। তবে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ওই পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মান করতে চাচ্ছেন। তবে কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিবেন, সেই সিদ্ধন্তে আমি একমত। এই স্কুলে শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন, শিক্ষার্থী রয়েছে ১৪৫ জন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম সানোয়ার হোসেন বলেন, পুরাতন ভবন না ভেঙ্গে আরেকটি ভবন নির্মান করা হলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা জায়গা থাকবে না। সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই পুরাতন ভবন ভেঙ্গে, ওই স্থানেই নতুন ভবন করার পরিকল্পনা নিয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে।

বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার বিকাশ, স্থানীয়দের বিভিন্ন সমস্যার কথা বিবেচনা করে পুরাতন ভবনটি উম্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে মোট ২ লক্ষ ১৬ হাজার টাকায় দেয়া হয়েছে। ভবনটি ভেঙ্গে নিলে নতুন ভবনের কাজ শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দীন লাভলু বলেন, উপজেলা সমন্বয় এক সভায় স্কুলের ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করে টেন্ডার দেয়া হয়। সেই টেন্ডারে ২২ জন ঠিকাদার অংশ গ্রহন করে। এতে টেন্ডার পেয়েছেন আলতাফ খাঁ নামের এক ঠিকাদার।

উল্লেখ্য, একটি পক্ষ পুরাতন ভবনের পাশে নতুন ভবন নির্মান এবং আরেকটি পক্ষ পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ওই স্থানে নতুন ভবন করার জন্য দাবি করা হচ্ছে।

 

আরপি/আআ-০৩

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top