রাজশাহী বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১

রাসিক বাজেট (অর্থ বছর ২০২০-২০২১)

সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সেবা বৃদ্ধি করতে হবে: মেয়র লিটন


প্রকাশিত:
২০ জুন ২০২০ ১৯:২৪

আপডেট:
৮ মে ২০২৪ ০৭:৪৯

ফাইল ছবি

আগামী ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের। শনিবার (২০ জুন) দুপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে আগামী অর্থ বছরের বাজেট পেশ করবেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এবং অর্থ ও সংস্থাপন স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।

এদিকে একাধিক নগরবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাজেট আসলেই নগববাসী ভয়ে থাকেন এই বুঝি হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি করা হলো। নগরবাসী তাদের অতীত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, রাসিক নিজেদের আয় বৃদ্ধি করতে সবসময় হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি দ্বিগুণ পর্যন্ত করেছে। তাদের ভাষায় রাসিকের যেনো এই খাত ছাড়া আয় বৃদ্ধির আর কোন খাতই নেই!

জানা যায়, রাসিকের আয় কম হওয়ায় এর আগের সময়ের মেয়র কর্মচারীদের বেতন পর্যন্ত নিয়মিত পরিশোধ করতে পারতেন না। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই কর্মচারীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতেন। এমন অবস্থায় নাগরিকদের প্রশ্ন ছিল যেই কর্পোরেশন তার কর্মচারীদের বেতনই ঠিকমতো দিতে পারে না সেই প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের প্রাপ্য সেবা কি নিশ্চিত করতে পারবে?

তবে বর্তমান মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ২০১৮ সালে নির্বাচিত হবার পর থেকে সিটি কর্পোরেশনের কাজে গতি ফেরে। কর্মচারীদের এখন পর্যন্ত বেতন নিয়ে আন্দোলনে নামতে দেখা যায়নি। রাসিকের অর্থ শাখার সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির কোন কর্মচারীর বেতন বকেয়া নেই। প্রত্যেককে মাসেন ২ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ করা হচ্ছে।

মেয়র লিটন বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সেবা বৃদ্ধি করতে হবে। হোল্ডিং ট্যাক্সসহ বর্তমান আয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আয়ের নতুন খাত সৃষ্টি করতে হবে।

রাজশাহী সিটিকর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান জানান, সিটি কর্পোরেশনের কাজেও আগের চাইতে গতি পেয়েছে। একই সাথে এর একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দাড় করানো সম্ভব হয়েছে। এখন যে কোন কাজের জন্য কাউন্সিলরদের জবাবদিহি করতে হয়। যা নাগরিকদের জন্য ভালো। নগরীর ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিস্কার করা হচ্ছে। নতুন নতুন রাস্তার পাশাপাশি বিদ্যামন রাস্তাঘাট প্রশস্থ ও সংস্কার করা হচ্ছে। ওলিগলির কাচা রাস্তা পাকা করা হচ্ছে। শতভাগ বিদ্যুতায়িত নগরীর ওলিগলিতে নতুন নতুন বিদ্যুতের পোল বসছে। নগরী আগের যেকোন সময়ের চাইতে অধিক পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন।

তিনি আরো জানান, রাসিক হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ভর আয় থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। এর জন্য নতুন আবাসিক নির্মাণসহ নির্মাণাধিন মার্কেটগুলো চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন করে এই খাত থেকেও আয় করা সম্ভব।

কাউন্সিলর কামরুজ্জামান মনে করেন রাসিকের আয়নতন তুলনামূলক কম। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রাসিকের আয়তন বৃদ্ধি করা জরুরী হয়ে পড়েছে। এতে করে সিটির বাইরের আশপাশের এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হবে। এ লক্ষে মেয়র কাজ করে চলেছেন। তাছাড়া এই এলাকায় তেমন কোন শিল্পকলকারখানা নেই। এদিকে রাসিকের নিজস্ব বেশকিছু মার্কেট দীর্ঘ দিন থেকে নির্মানাধীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই মার্কেটগুলো দ্রুত নির্মাণ শেষে চালু করা গেলে রাসিকের আয় অনেকটা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে বলেও তিনি মনে করেন।

আসন্ন বাজের প্রসঙ্গে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আয়ের নতুন নতুন খাত সৃষ্টির মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সেবা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। আয়ের খাতও সীমিত। তাই নতুন নতুন খাত সৃষ্টির মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের আয় বৃদ্ধি করতে হবে। এবার প্রায় ১০৩ কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে দায়িত্ব নিয়ে পর্যায়ক্রমে ঋণ পরিশোধ করে বর্তমানে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার চেষ্টা চলছে।

মেয়র আরো জানান, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ বর্তমান আয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আয়ের নতুন খাত সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে সিটি ইউনিভাসিটি চালু করা হবে। খুব শীঘ্রই স্বপ্নচুড়াসহ অন্যান্য মার্কেটসমূহ হতে আয় শুরু হবে। নতুন আবাসিক এলাকা স্থাপন, সিএনজি স্টেশন স্থাপনসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে আয় বৃদ্ধি করা হবে। প্রতিষ্ঠানটি যেন বিগত সময়ের মতো কোনভাবেই আর দেউলিয়ার প্রতিষ্ঠানে পরিণত না হয় সেদিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে।

 

 

আরপি/ এমএএইচ-১১



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top