রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউনে চিড়িয়াখানা থেকে ৭৫-৮০ লাখ টাকা আয় বঞ্চিত রাসিক


প্রকাশিত:
৬ জুন ২০২০ ০৪:০০

আপডেট:
৬ জুন ২০২০ ০৪:০২

রাজশাহী চিড়িয়াখানা

চলমান লকডাউনে স্থবির জনজীবন। জীবন যেখানে অনিশ্চিত, সেখানে চিত্ত-বিনোদন বিবেচ্য হয় না। ফলশ্রুতিতে সারাদেশের মত বিভাগীয় শহর রাজশাহীতেও বন্ধ রয়েছে চিত্ত-বিনোদনের প্রধান কেন্দ্র শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা।

জানা গেছে, ১৭ মার্চ থেকে দর্শনার্থীদের প্রবেশ, বনভোজন ও ভ্রমন বন্ধ করে দেয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। একদিন পর ১৯ মার্চ জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সরকারিভাবে বন্ধ করা হয় চিড়িয়াখানা। ফলে এই লকডাউন সময়ে চিড়িয়াখানা থেকে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ লাখ টাকা আয় বঞ্চিত হয়েছে পরিচালনা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)।

বছরে প্রায় ২০ লাখের মত দর্শনার্থী আসেন চিড়িয়াখানায়। এতে ২ কোটি টাকার উপরে আয়ের খাতায় যোগ হয়। জানুয়ারি-মে, এই পাঁচ মাস ও দুই ঈদে দর্শনার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বনভোজন ও প্রমোদ ভ্রমনের জন্য আসেন লাখ লাখ দর্শনার্থী। কিন্তু লকডাউনের ফলে ভরা মৌসুমেই স্থবির হয়ে পড়েছে চিড়িয়াখানা। এতে করে মোটা অঙ্কের আয় বঞ্চিত হচ্ছে রাসিক।

চিড়িয়াখানার সুপারভাইজার শরিফুল ইসলামের দেয়া তথ্যমতে, গত বছর চিড়িয়াখানা থেকে ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা আয় হয়েছে। চলতি বছর ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যথাযথ তদারকি ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ বাড়ায় এ বছর লক্ষ্য১মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি আয় হতো বলে ধারণা করছেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাসে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৬ হাজার ১৯৩ জন। আয় হয়েছে ২০ লাখ ২৯ হাজার ১৯০ টাকা। ফেব্রুয়ারি মাসের দর্শনার্থী সংখ্যা ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৩ জন, আয় ৩১ লাখ ৮৭ হাজার ৯৩০ টাকা। পরের মাসে চিড়িয়াখানা বন্ধের পূর্বে ১৬ মার্চ পর্যন্ত দর্শনার্থী ছিল ৬৭ হাজার ১২১ জন এবং আয় হয়েছে ২০ লাখ ৩১ হাজার ৯৩০ টাকা। ফলে সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত বেশ মোটা অঙ্কের আয় বন্ধ হয়ে গেছে।

আয় বন্ধ থাকলেও চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনায় প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ হচ্ছে। পশু-পাখির খাদ্য, চিকিৎসা, জীবানু২নাশক, পরিচর্যায় নিয়োজিত কর্মীসহ বিভিন্ন খাতে বছরে প্রায় ৯০ থেকে ৯২ লাখ টাকার মত ব্যয় হয়।

জানা গেছে, পশুদের খাদ্য সরবরাহ ও অন্যান্য কাজের দায়িত্ব পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিলয় ট্রেডার্স, মেসার্স ফরিদা ইসলাম এন্টারপ্রাইজ ও শফি সালেক এন্টারপ্রাইজ। প্রতি মাসে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকার মত প্রদান করতে হয় সিটি কর্পোরেশনকে। আর পরিচর্যা ও দেকভালের কাজে নিয়োজিত ৮ জন কর্মচারীদের জন্যও বেশ মোটা অঙ্কের টাকা খরচ হয়। আয় বঞ্চিত থাকায় যা জমা হচ্ছে লোকসানের খাতায়।

গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চিড়িয়াখানা বন্ধ রয়েছে। মানুষের আনাগোনা নেই। ফলে পশুপাখি ও সবুজ পত্রপল্লব যেন একে অপরের সঙ্গী হয়েছে। দীর্ঘ সময় মানুষের আনোগোনা না থাকায় শব্দহীন ছন্দে দুলছে প্রকৃতি।

চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক মাহাবুবুর রহমান বলেন, মাননীয় মেয়র মহোদয়ের নেতৃত্বে সুচারুভাবে চিড়িয়াখানা পরিচালনা করা হচ্ছে। চিত্ত1বিনোদন ও চিড়িয়াখানার সেবার মান বাড়ায় অতীতের তুলনায় দর্শনার্থীও বেড়েছে। এতে করে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ও জনগনের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভেবে গত ১৭ মার্চ থেকে চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সময়ে বিপুল পরিমান আয় বঞ্চিত হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top