রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১

চারঘাটে বন্ধ হচ্ছে না কৃষি জমিতে পুকুর খনন


প্রকাশিত:
৪ জুন ২০২০ ১৯:০৪

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ১৬:৩৮

যে মাঠ জুড়ে এক সময় চাষ হতো ধান, গমসহ বিভিন্ন ফসল। চোখ মেললে যেখানে সবুজের সমারোহে মনটা ভরে উঠতো। আজ সেই সবুজের বুক চিড়ে খনন করা হচ্ছে অবৈধ ভাবে একের পর এক পুকুর। যেনো দেখার কেউ নেই। গত কয়েক মাস ধরে শুধু একটি মাঠেই প্রায় আড়াইশ থেকে তিনশ বিঘা জমিতে হয়েছে অবৈধ পুকুর খনন।
মাঠের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে তাকালেই শুধু পুকুর আর পুকুর। এভাবে চলতে থাকলে গোটা চারঘাট এক সময় চরম সংকটের মধ্যে পড়বে। এভাবেই আক্ষেপ জানান ভুক্তভোগীরা।
শুধু চৌধুরীর বিলেই পুকুর খনন করা হচ্ছে এমনটা নয়। উপজেলার নিমপাড়া, শলুয়া ও সরদহ ইউনিয়নের অধিকাংশ মাঠেই চলছে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের মহা উৎসব।
সরজমিনে এসব ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে ফসলী মাঠ জুড়ে এসকেভেটর দিয়ে রিতিমত পুকুর খননের উৎসবে মেতেছে এক শ্রেণীর ভুমিদস্যুরা। কেউ খনন করছেন নিজের জমিতে আবার কেউ খনন করছেন অন্যের জমি চুক্তির ভিত্তিতে লিজ নিয়ে। দিন রাত সমান তালেই চলছে পুকুর খনন।
চৌধুরীর বিলে অবৈধ পুকুর খনন বিষয়ে জানতে চাইলে জমির মালিক বাদশা বলেন, আমার জমিতে ধান করা হতো। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে আমার জমির আশে পাশে পুকুর খননের ফলে ধান চাষ করা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে আমিও পুকুর খনন করছি।
ধানি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হলে ভুমি মন্ত্রনালয়ের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আপনি কি সেই অনুমতি নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাদশার জমিতে পুকুর খননকারী আব্দুস সামাদ বলেন, আমি জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করেছি। যেদিনই হোক অনুমতি তো পাবো, সেজন্য আগে থেকেই খনন শুরু করেছি।
অথচ মাস খানেক আগেই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিসুর রহমান চৌধুরীর বিলের বাদশা জমিতে পুকুর খনন করা বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু তার দুইদিন পর থেকে আরো দ্বিগুন গতিতে সেই জমিতে পুকুর খনন চলছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুনজুর রহমান জানান, অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন হতে থাকলে চরম ভাবে কৃষি জমির উপর প্রভাব পড়বে। এতে কৃষি জমি সংকটে পড়বে। তবে ইতিমধ্যে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভিন্ন জায়গায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে জেল জরিমানাও করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রানঘাতি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন যখন ব্যস্ত, ঠিক তখন প্রশাসনের ব্যস্ততাকে পুজি করে এক শ্রেণীর প্রভাবশালীরা রাত দিন চালাচ্ছেন অবৈধ পুকুর খনন। বিভিন্ন মাঠে আম বাগান, ধানের জমি, গমের জমিসহ উর্বর জমি নষ্ট করে অধিক মুনাফার আশায় করছেন পুকুর খনন। সাময়িক ভাবে পুকুর খননের সুফল পেলেও দীর্ঘয়োদী ক্ষীতর মুখে পড়বে গোটা চারঘাট উপজেলা। তাই দ্রুত এসব অবৈধ পুকুর খননকারীদের চিহিৃত করে তালিকা তৈরীর মাধ্যমে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। নইলে চারঘাট এক সময় পুকুরের জন্য বিখ্যাত বলে পরিচিত পাবে।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) আনিসুর রহমান বলেন, অবৈধ ভাবে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান সব সময়ই চলমান আছে। পুকুর খননের তথ্য পেলে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জেল জরিমানাও করা হচ্ছে।

আরপি/ এআর-২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top