রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১

বাঘায় পুকুর খননের কারণে জলবদ্ধতা, পরিদর্শনে উপজেলা প্রশাসন


প্রকাশিত:
১ জুন ২০২০ ০৩:১০

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:১৩

বাঘায় পুকুর খননের কারণে জলবদ্ধতা পরিদর্শনে উপজেলা প্রশাসন

রাজশাহীর বাঘায় বিলে পুকুর খননের কারনে বৃষ্টির পানি তলিয়ে আছে শতাধিক বিঘার ধান। এমন ঘটনা হয়ে আছে উপজেলার নওটিকা-ধন্দহ্-আরিফপুর বিলে। শনিবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিসার ওই বিল পরিদর্শন করেন।

এ সময় তারা বিলের জলবদ্ধতা নিরসনে বিকল্প কি করা জনসাধারণের সঙ্গে অলোচনা করেন। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সঙ্গে আলোচনা করে স্থানীয়দের নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে। নয় তো বা প্রকল্পের মাধ্যমে পানি নিস্কাশনের বিষয়ে আস্বস্ত  করা হয়েছে  স্থানীয়দের।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিলে ক্ষতিগ্রস্থ ধান চাষিদের তালিকা করে সহযোগিতা করা হবে বলেও চাষিদের জানান। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে ডুবে যাওয়া সমস্ত ধান মাঠ থেকে সংগ্রহ করতে পরামর্শ দেন।
বাজুবাঘা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর আবদুল লতিফ বলেন, এই বিলের আওতায় চাষিদের সারা বছরের ধান ঘরে উঠতো। আজ পুকুর কাটার কারনে রোপন করা ধান কাটতে পারছে না। ফলে বেকায়দায় রয়েছে নওটিকা বিলের ধান চাষিরা। তিনি যে কোনভাবে এ জলবদ্ধতার স্থায়ী  সমাধান করার দাবি জানান।

নওটিকা গ্রামের ধান চাষি বয়েজুল ইসলাম বলেন, এই বিলে তিন বছর আগেও গমের আবাদ হতো। পুকুর কাটার কারনে এখন সারা বছর পানি জমে থাকে। এই পানি জমে থাকার কারণে সময় মতো ধানের আবাদ করা যাচ্ছে না। তবে কেউ কেউ আবাদ করলেও ধান পাকার আগেই আবার বৃষ্টির পানিতে তলে যাচ্ছে। অনেক কষ্ট করে ধানের আবাদ করার পরও এখনো কিছু জমির ধান পানির মধ্যে রয়েছে। এখনো কাটকে পারিনি। তবে খননকৃত পুকুরগুলোর পাড় কেটে অথবা জমির বিলের জমির ধরণ আগের মতো করে দেয়ার দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ্ সুলতান বলেন, এই বিলের পানি বের করতে হলে ব্যক্তি মালিকানা ২০-২৫টি বাড়ি আছে। তাদের তালিকা তৈরী করে জমি অধিগ্রহন করে পূর্বের খাল খনন প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করা যাচ্ছে। তবে ডুবে যাওয়া ধান মাঠ থেকে সংগ্রহ করতে চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, এই এলাকায় গত বছর সরকারিভাবে খাল খনন শুরু করা হয়েছিল। খাল খনন করতে গিয়ে স্থানীয়রা বাধা দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। তারপর ওই খাল খনন বন্ধ হয়ে যায়। তবে এ বিষয়ে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ, কৃষি অফিস ও স্থানীয় জগণকে সাথে নিয়ে এটির  স্থায়ী সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দীন লাভলু বলেন, এটি সময়ের ব্যাপার। পূব দিক দিয়ে হোক আর দক্ষিণ দিয়ে হোক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পানি নিস্কাশনের স্থায়ী ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে দাবি করেন।

উল্লেখ্য, উপজেলার নওটিকা-ধন্দ-আরিফপুর বিলে দুই বছরের ব্যবধানে অর্ধশতটি পুকুর খনন করা হয়েছে। এই বিলে পুকুর খননের কারনে বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হতে না পেরে শতাধিক বিঘার ধান পানিতে ডুবে আছে। এই পরিস্থিতির জন্য এলাকার প্রভাবশালীদের দায়ী করছেন বিলের ধান চাষিরা। এদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার কারনে এ দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

বাঘা উপজেলার নওটিকা-ধন্দহ্-আরিফপুর বিলে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দুই থেকে তিন বছরের  ব্যবধানে অর্ধশত পুকুর খনন করা হয়েছে। এই বিলে পুকুর খননের কারণে বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হতে না পেরে পানিতে ধান তলিয়ে আছে অবার অনেকের জমি রয়েছে পতিত পড়ে। এই পরিস্থিত জন্য এলাকার প্রভাবশালীদের দায়ী করছেন নওকিটা-ধন্দহ্-আরিফপুর বিলের ধান চাষিরা।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top