রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ, সুনশান ক্লিনিকপাড়া


প্রকাশিত:
২৩ এপ্রিল ২০২০ ১৭:৪৫

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪৪

 

এখনো বন্ধ রাজশাহীর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। বন্ধ রাখা হয়েছে চিকিৎসকদের চেম্বারও। করোনাভাইরাসের কারণে রাজশাহীর ছোট বড় প্রায় সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে রোগীদের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

রাজশাহীর দু’একটি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা হলেও রোগীর পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হচ্ছে না বললেই চলে। বেসরকারী ক্লিনিকে শুধুমাত্র সিজারিয়ান অপারেশন হচ্ছে। এছাড়া আর কোনো পরীক্ষা নীরিক্ষা হচ্ছে না। ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা বলছেন, রোগি নাই, চিকিৎসকরাও বসছেন না চেম্বারে। যার কারণে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে, চিকিৎসকরা বলছেন, যানবাহন বন্ধ থাকায় রোগী আসছে না। কোন কোন চিকিৎসক চেম্বারে বসলেও সেখানে রোগী আসে না। তবে হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা পুরোপুরি চালু রয়েছে।

জানা গেছে, রাজশাহীতে ছোটবড় মিলে সমিতিভুক্ত ১২০টি বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এসব বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা এক সময় রমরমা ব্যবসা করেছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর একটি একটি করে এসব বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া শুরু হয়। ঐ সময় থেকে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসও বন্ধ হয়ে যায়।

রাজশাহী মডেল হাসপাতালের ম্যানেজার সৌরভ হোসেন জানান, তাদের হাসপাতাল স্বল্প পরিসরে খোলা রাখা হচ্ছে। কিন্তু যানবাহন চলাচল না করার জন্য রোগী হচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকার বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা রাখার কথা বলেছেন, কিন্তু খুলে রেখে কী হবে, রোগী তো নেই। এছাড়াও হাসপাতাল খুলে রাখলে কর্মচারিদের বেতনের বিষয়টি আছে। রোগী না হলে মালিক কী করে কর্মচারিদের বেতন দিবে ? নগরীর আলট্রাপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্তাধিকারী পলাশ জানান, দিনে প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী রক্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা হতো আগে। এখন দিনে দুটো রোগীও পাওয়া যায় না। এছাড়াও রোগী না হলে কর্মচারিদের বেতন দেবো কোথায় থেকে? বেতন দেয়ার ভয়েই বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা তাদের চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ রেখেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।এমন অবস্থার কথা জানান, বেশিরভাগ বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মালিকরা।

এদিকে সাধারণ চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশসানও এর সমাধানের চেষ্টা করে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও সাধারণ চিকিৎসা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন। তারা চিকিৎসকদের সাথেও কথা বলেন। কিন্তু এখনও এর কোন সমাধান নেই। রাজশাহীর চিকিৎসা কর্ণার হিসেবে পরিচিতি লক্ষ্মীপুর মোড়ে এখনো সুনশান নিরবতা চলছে।
রাজশাহী বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. আব্দুল মান্নান বলেন, রোগী না থাকলে বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে কী হবে। রাজশাহীতে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে রোগী আসেন। কিন্তু যানবাহন না চলার কারণে রোগী আসতে পারছেন না। যার কারণে সব মালিক পক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েই বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন যে দু’একটি বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা আছে তারাও রোগী পাচ্ছেন না। তবে কিছু কিছু ক্লিনিকে সিজারিয়ানের রোগী আসছে। তবে এটা অতি সীমিত। তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কবে নাগাদ এসব বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা হবে।
এব্যাপারে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু মালিক পক্ষ খুলছেন না। যে দু’একটা খোলা আছে সেখানে রোগী নেই বলেও জানানো হচ্ছে। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে কোনো পদক্ষেপও নেয়া যাচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

আরপি/ এআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top