রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

গোদাগাড়ীতে তিন বাল্যবিয়ে বন্ধ,বর-কাজীর জেল


প্রকাশিত:
২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৫

আপডেট:
২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩০

প্রতীকি ছবি

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুল ইসলাম সরকার ও সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) মোহাম্মদ ইমরানুল হকের পৃথক তৎপরতায় তিনটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত এক কাজীর ১ বছরের কারাদন্ড ও এক বরের ৬ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের রাইয়াপুর গ্রামের মোঃ আনারুল ইসলামের মেয়ে ও বিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী মিম আক্তার (১৩) এর বাল্যবিয়ের আয়োজন করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম সরকার বিয়ে বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে তিনি থানা পুলিশের সহযোগিতায় বাল্যবিয়ের শিকার মিমের পিতা- মাতাসহ পরিবারের লোকজনের সাথে বাল্যবিবাহের কুফল বুঝিয়ে বিয়ে না দিতে বলেন। এতে পিতা-মাতা তাতে সম্মতি দিয়ে আঠারো বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বাল্যবিয়ের দিবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে অঙ্গীকার করেন।

এসময় বর ইসমাইল হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অভিযানের কথা শুনে বিয়ের পিঁড়ি থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায়।


অপরদিকে, গোদাগাড়ি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) মোহাম্মদ ইমরানুল হকের নেতৃত্বে মাটিকাটা ইউনিয়নের কালিদিঘি গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমানের সোনাদিঘি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী রেশমি খাতুন (১৪) বিয়ের খবরে তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়। এসময় তিনি ও বাল্যবিবাহ আত্মীয়স্বজনদের বাল্যবিয়ের কুফল বুঝিয়ে বলাতে তাতে তারা সম্মতি হয়ে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দিবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে সেটি বন্ধ হয়ে যায়।

রেশমি খাতুনের বাল্য বিবাহের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া করার মাটিকাটা গ্রামের মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলের ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের কাজী শিররুল হুদা (৪৫) কে এক বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়।

সেইদিনই রাতে উপজেলার বিজয়নগর দরগাপাড়া এলাকায় আবু বকরের ছেলে মতিউর রহমান (২২) এক অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে এই খবরের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুল ইসলাম সরকার সেই বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে বর মতিউর রহমান কে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে এসে ৬ মাসের কারাদন্ড এবং অল্প বয়সের মেয়েকে বিবাহ করতে মর্মে মুচলেকা দেয়।

এদিকে বাল্যবিবাহের ঘটনায় বিয়ের আয়োজনের সকল খাবার-দাবার প্রস্তুত হয়ে গেলেও আইনের বাধ্যবাধকতায় সকল কিছু আটকে যায়। তাই সেই খাবারগুলো স্থানীয় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বন্টন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুল ইসলাম সরকার বলেন, ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরা। এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে কোন ছাড় নাই আমরা সেখানে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top