রাজশাহী মঙ্গলবার, ১৪ই মে ২০২৪, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড ঘরবাড়ি, অন্যত্র আশ্রয়


প্রকাশিত:
৪ এপ্রিল ২০২৩ ১০:৪১

আপডেট:
১৪ মে ২০২৪ ২১:৩৮

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

রাজশাহীর বাঘায় কয়েক মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক ঘর-বাড়ি। দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি দোকানের টিনের চালা উড়ে গেছে। তেঁথুলিয়া নওদাপাড়া বাজারে একটি বিদ্যুতের খুঁটিসহ আঘাত হানে অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে।

গতকাল রোববার (২ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়। আকস্মিক এই ঝড়ে ইউনিয়নের তেঁথুলিয়া নওদাপাড়া, কান্দিপাড়া, ফতিয়াড় দাঁড়, পীরগাছা গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

সোমবার (৩ এপ্রিল) সরেজমিনে তেঁথুলিয়া ও পীরগাছা গ্রামে দেখা যায়, তেঁথুলিয়া নওদাপাড়া গ্রামের স্কুলছাত্রী বিপাশা খাতুন বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া বইখাতা ও কোরআন শরীফ রোদে শুকাতে দিয়েছেন। বই ভিজে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ তৈরি হয়েছে তেঁথুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এই ছাত্রীর।

নিজেদের ঘরের চালা উড়ে যাওয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী হাবিবুর রহমানের বাড়িতে। বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে বাড়ির আসবাবপত্রসহ বিপাশা খাতুনের সমস্ত বই খাতা। ঝড়ে এমন অনেকেই টিনের চালা উড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ভেঙ্গে গেছে গাছপালাও।

বিপাশার দিনমজুর বাবা বিকুল আলী বলেন, দিনমুজুরি কাজ করে প্রতিদিন আয় করি ৩০০ টাকা। কোনো মতে এই রোজগারের টাকা দিয়ে সংসার চলে। কাজ না পেলে টানাপোড়নে পড়তে হয়। যার কারণে ঋণ দেনা করতে হয়। এর মাঝে ঝড়ে টিনের চালা উড়ে যাওয়া ঘরটি মেরামত করবো কি করে?

তেঁথুলিয়া বাজারের কাঠ ফার্নিচার ব্যবসায়ী মদন আলী বলেন, আমি দোকানে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ঝড়ে ঘরের চালা উড়ে বাজারে কড়ই গাছে গিয়ে পড়ে। আমারসহ ৫টি দোকানের টিনের চালা উড়ে গেছে।

ফতিয়ার দাঁড় গ্রামে দেখা যায়, আহমেদ আলীর ঘর ভেঙ্গে কোরবানির খাসি চাপা পড়ে পা ভেঙ্গ গেছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তিনি নিজেই। তেঁথুলিয়া কান্দিপাড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ঘরের উপর গাছ পড়ে স্ত্রী নাসরিন আহত হয়। মুক্তার আলীর ২৫ বছর বয়সের একটি জাম গাছ উপড়ে গেছে। পাশে মন্টু ও জালেম আলীর ঘর উড়ে গেছে। শহিদুল ইসলাম, জিন্দার আলী, সুজন আলী, কাচু উদ্দিনের বাড়ি-ঘরসহ শতশত আম, কলা, মেহগনি গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতানা বলেন, মৌসুমের শেষে হওয়ায় গম, মসুর উঠে গেছে। কিছুটা কাঠ জাতীয় ও আমের ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ক্ষতির পরিমান নির্ধারনের জন্য কাজ করছে উপজেলা কৃষি অফিস।

বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. লায়েব উদ্দিন লাভলু বলেন, হঠাৎ ঝড়ে ওই বাড়িগুলো লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি বাড়ির চালা উড়ে গেছে, গাছপালাও উপড়ে গেছে। বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৈদ্যুতের খুটি ও তার ছিঁড়ে লাইন নষ্ট হয়েছে।

দুর্ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি জেলা ত্রাণ কর্মকর্তাকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা সহযোগিতা চেয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন, তাদের সহায়তার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আখতার বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।

 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top