রাজশাহী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১

যাত্রাপালার নারীর সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের নাচ!


প্রকাশিত:
৪ জানুয়ারী ২০২৩ ১১:১২

আপডেট:
৪ জানুয়ারী ২০২৩ ১১:২৫

ফাইল ছবি

রাজশাহীর দুর্গাপুরে যাত্রার মঞ্চে নেচে ভাইরাল হয়েছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। এ নৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিকার চেয়ে গণ আবেদন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার (২ জানুয়ারি) রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর এ গণ দরখাস্ত জমা দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের নাম আজাহার আলী। তিনি দুর্গাপুর উপজেলার ৩নং পানানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হন তিনি।

জানা যায়, গত ২৭ ডিসেম্বর এলাকায় আসা একটি যাত্রা মঞ্চে উঠে নর্তকীদের সঙ্গে নেচে ভাইরাল হন আজাহার আলী। সেই নাচের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এলাকাবাসীর দাবি, যাত্রা মঞ্চে আপত্তিকর সেই নাচের সঙ্গে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিও করেছেন এই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এতে এলাকার মানসম্মানহানি ঘটেছে। বিভিন্ন অপকর্ম এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে গণদরখাস্ত করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী খান গত ২৭ ডিসেম্বর পানানগর বাজারে যাত্রাপালার আয়োজন করেন। ওই যাত্রাপালার আসরে তিনি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। একদল নর্তকী নৃত্য করতে মঞ্চে এলে চেয়ারম্যান আজাহার আলীও উত্তেজিত অবস্থায় আকস্মিকভাবে মঞ্চে উঠে পড়েন।

অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির সেই নাচের সঙ্গে চেয়ারম্যানও নাচতে শুরু করেন। মঞ্চে তিনি নৃত্যশিল্লীদের আপত্তিকরভাবে জড়িয়ে ধরেন। কোমর দুলাতে দুলাতে একপর্যায়ে বেহুঁস হয়ে পড়েন তিনি। চেয়ারম্যান যখন নৃত্যশিল্লীদের জড়িয়ে ধরে নৃত্য করছিলেন সেই সময় এলাকার লোকজন তা মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। পর দিন সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। চেয়ারম্যানের এমন আচরণ তার নৈতিক স্খলন।

চেয়ারম্যানের উদ্যোগে পানানগর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিকৃত প্রতিকৃতি সম্প্রতি অঙ্কন করা হয়। এ নিয়ে এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিকৃতিটি মুছে ফেলে প্রকৃত আকারে তা অঙ্কনের দাবি করেন। এ খাতে চেয়ারম্যান দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেখালেও মাত্র কয়েক হাজার টাকা দিয়ে একজন অদক্ষ শিল্লীকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রতিকৃতিটি করা হয়েছে বলে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ।

চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রসঙ্গ টেনে অভিযোগে বলা হয়, আজাহার আলী এক সময় উপজেলা যুবদলের সভাপতি ও দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলের মনোনয়নে গত নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগই তিনি আত্মসাৎ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানানগর ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী জানান, তিনি অনেক আগে থেকে যাত্রাপালার সঙ্গে জড়িত। গান গেয়ে এলাকার মানুষকে বিনোদন দিতে মঞ্চে ওঠেন তিনি। কিন্তু নৃত্যশিল্পীদের কারণে নাচতে বাধ্য হন।

এ ঘটনায় পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সমস্যায় আছেন বলে স্বীকারও করেছেন তিনি। আর বঙ্গবন্ধুর বিকৃত প্রতিকৃতি শিগগিরই ঠিক করা হবে বলেও জানান তিনি।

এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। এ ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

 

আরপি/এসআর-০৩



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top