রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০

সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা, ১২ বছরের সাজা


প্রকাশিত:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৫৩

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪:৪২

সংগৃহিত

চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগে সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া এক যুবককে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইবুনাল আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি পৃথক ধারায় এ রায় ঘোষণা করা হয়।

সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম মোজাফফর হোসেন ওরফে রনি (২৯)। তিনি পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার ভণ্ডপাল গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে।

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-৫ এর একটি দল ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারী রাতে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাটগঙ্গা বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

এসময় আসামিদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন জব্দ করে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে চাকরি দেওয়ার জন্য টাকা আদায়ের প্রমাণ মেলে। তারা বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাতো। সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম পরিচয় রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতো।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি স্বীকার করে, সে বিভিন্ন সামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে পরিচিত হয়ে ফেসবুকে মেসেঞ্জার থেকে চাকরি দেওয়ার নামে চাকরি প্রত্যাশীদের সাথে যোগাযোগ করত। চাকরি দেওয়ার নামে সে ৩০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় কিছুদিন আত্মগোপনে ছিল।

বিষয়টি জানতে পেরে র‍্যাব-৫ রাজশাহী ক্যাম্পের এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে ৭ জানুয়ারি বাগমারা থানায় মামলা দায়ের করেন।

রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বিচার শুরু হলে আদালত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আদালত আসামি মোজাফফর হোসেন ওরফে রনিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি পৃথক ধারায় শাস্তি প্রদান করেন। এর মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৩(১)/২৪(১)/২৬(১) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৩(২) ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

আবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৪(২) ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

এছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৬(২) ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

তিনি আরও বলেন, সাজা একটার পরে একটা কার্যকর হবে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। আসামির হাজতবাস মূল সাজা থেকে বাদ যাবে। জরিমানার টাকা মামলার ভিকটিমরা পাবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

আরপি/ এসএইচ ১৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top