রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে আমদানি কমায় বেড়েছে আমের দাম


প্রকাশিত:
৩ জুলাই ২০২২ ০২:৪৮

আপডেট:
৩ জুলাই ২০২২ ০৬:৫৬

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী জেলার বানেশ্বর বাজারে মৌসুমের শেষে আমদানি কমেছে আমের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমের আমদানি সপ্তাহের শুরুতে কমেছে। ফলে আগের তুলনায় আমের দাম মণে বেড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।

শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে বানেশ্বরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে এখন দেখা মিলছে নাক ফজলি, ফজলি, আশ্বিনা, আম্রপালি ও সামান্য হাঁড়িভাঙ্গা জাতের আম। ফজলি আম বেশি রয়েছে বাজারে। বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আম্রপালি আম। তবে, বাজার থেকে ল্যাংড়া আম উধাও হয়ে গেছে। বড় জাতের আমের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ফজলি আর আশ্বিনা।

বানেশ্বর বাজারের আম ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, বানেশ্বর আমের হাটে বর্তমানে ৪ ধরনের আম বেচা-কেনা হচ্ছে। ফজলি, আম্রপালি, আশ্বিনা ও হাঁড়িভাঙ্গা। এসব আমের মধ্যে দাম বেড়েছে ফজলি আমের। গত সপ্তাহের শেষেও ফজলি আম ১ হাজার থেকে ১১’শ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। আজ শনিবার মণে ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা বেড়েছে। ১৪’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে ফজলি।

অন্যান্য আমের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, আম্রপালি ২৮’শ টাকা থেকে ৩ হাজার, আশ্বিনা ৮০০ থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা এবং কিছু পরিমাণ হাঁড়িভাঙ্গা আম আছে। বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে ২৬’শ টাকা। আশ্বিনা আমের দাম কমেছে। ১ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে আশি^না কিন্তু আজ দাম কমেছে মণে ২০০ টাকা। আমদানি কমেছে। এখন আস্তে আস্তে আমের হাটে ভিড় কমবে।

রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে বিক্রি করছেন শহিদুল ইসলাম। আমের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে ফজলি আম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। কেজিতে ৫ টাকা বাড়তি হিসেবে ৪০ টাকা বিক্রি করছি। এখন আমের আমদানি কমবে তাই দাম বাড়বে। ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। আজকের বাজারে দেড় হাজার টাকা মণ ফজলি। আম্রপালি বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ২২’শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।

আম ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, আম আর বেশিদিন থাকবে না। মানুষের আম কেনার আগ্রহ আছে। কিনছে ৪ কেজি ৫ কেজি করে। সবজি কিনতে এসে আম কিনছে অনেকে। আমরা অল্প লাভে ছেড়ে দিচ্ছি। মানুষ খেয়ে মজা নিক।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আম আবাদ হয়েছে, ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত বছর ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আম আবাদ হয়েছিল। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছিল ১১ দশমিক ৯৬ টন। মোট উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪০ দশমিক ৫৩ টন আম, যার বিক্রয়মূল্য ছিল প্রায় ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৬২ হাজার ১২০ টাকা।

বাজারের অবস্থা জানতে চাইলে বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইয়ের কানসাটের পরেই বানেশ্বর বাজার। প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার আম বেঁচাকেনা হয় এখানে। বাজারে এখন আম্রপালি, ফজলি আর আশ্বিনা আম আছে। অল্প আছে ল্যাংড়া। বাজারে আমের আমদানি বেশি। ক্রেতা সে তুলনায় কম।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে সর্বপ্রথম গুটি জাতের আম আগে আসে। পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা আম বাজারে আসে। এরপর বাজারে আসে খিরসাপাত, হিমসাগর ও লখনা। সর্বশেষ আশ্বিনা আর ফজলি আম বাজারে আসে। এছাড়া হাঁড়িভাঙ্গা আমও বাজারে মিলছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top