রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে কভিড সংক্রমণ বাড়ল ১৬.৯৩ শতাংশ, নতুন হটস্পট ৫ উপজেলা


প্রকাশিত:
২০ জুন ২০২১ ২৩:৫৬

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২১:২৯

ফাইল ছবি

রাজশাহীতে একদিনেই কভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। শনিবার দুইটি ল্যাবে রাজশাহীর ৪১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রাতে প্রকাশিত ফলাফলে ১৯৫ জনের কভিড-১৯ শনাক্ত হয়। যা আগের দিনের চেয়ে ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি।

এরই সাথে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বাড়ছে কভিড রোগীর চাপ। হাসপাতালের কভিড ইউনিটে ভর্তি রোগীর ৫০ শতাংশই গ্রামের। জেলার পাঁচ উপজেলা থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তবর্তী গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী আসছেন। এর পরেই রয়েছে জেলার দুর্গাপুর, বাগমারা ও চারঘাট উপজেলা। ফলে এই পাঁচ উপজেলা কভিড-১৯ হটস্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামিম ইয়াজদানী জানান, কভিড ইউনিটের পঞ্চাশ ভাগ রোগী গ্রাম থেকে আসছেন। যাদের অধিকাংশই কৃষক অথবা গৃহিণী। আর শহরের যারা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন, তাদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী।

শনিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে শামীম ইয়াজদানী বলেন, গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী আসছেন। এর পরের অবস্থানে আছে দুর্গাপুর, বাগমারা ও চারঘাট থেকে আসা রোগী। সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে বোয়ালিয়া এলাকার বেশি রোগী। যাদের অধিকাংশই ব্যবসায়ী।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি উত্তরণে নিজ নিজ এলাকার মানুষদেরকে স্বাস্থ্যবিধি পালনে সচেতন করতে ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদেরকে প্রচার-প্রচারণায় জোর দিতে হবে। শুধু হাসপাতালের চিকিৎসার ওপর নির্ভর হয়ে থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। মনে রাখতে হবে প্রতিটি হাসপাতালের নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।

এদিকে ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ল্যাবে ৬৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে কভিড পজিটিভ হয়েছেন ২৮০ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৪১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কভিড পজিটিভ হয়েছেন ১৯৫ জন। করোনা শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৯৯ শতাংশে। যা আগের দিনের চেয়ে ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। শুক্রবার রাজশাহীতে কভিড শনাক্তের হার ছিল ৩০ দশমিক ০৬ শতাংশ। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ৪৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ, গত বুধবার ৪১ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মঙ্গলবার ছিল ৪৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এদিন রাজশাহী ছাড়াও নওগাঁর ৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। যা শনাক্তের হার ৫৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২০০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬৩ জনের পজিটিভ আসে। এখানে শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ ছাড়াও বিদেশগামী ছয়জনের নমুনা পরীক্ষা করে দুইজনের পজেটিভ এসেছে।

রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামিম ইয়াজদানী জানান, হাসপাতালের কভিড ইউনিটে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১ জন কভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন। অন্য ৯ জন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর ৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২ জন ও নওগাঁর ১ জন। এ নিয়ে চলতি মাসের ১ জুন সকাল ৬টা থেকে ২০ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত ২০ দিনে হাসপাতালের কভিড ইউনিটে মারা গেলেন ২০৩ জন।

হাসপাতাল পরিচালক জানান, শনিবার সকাল হাসপাতালের কভিড ওয়ার্ডের ৩০৯টি বেডের বিপরীতে ৩৬৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। যা করোনা মহামারি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত এক মাসে করোনা রোগীদের জন্য ১০০ এর বেশি বেড প্রস্তুত করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, রোববার থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডেও করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হবে। এই ওয়ার্ডে মোট ৪৮টি বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার আক্রান্তদের শুরু থেকেই অক্সিজেনের প্রয়োজন বড়ছে। যা ভয়ের অন্যতম কারণ।


আরপি/এসআর-১৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top