রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১

বাঘায় ঝোপঝাড়ে ইলিশ বিক্রি


প্রকাশিত:
২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৪০

আপডেট:
২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৪২

ছবি: ইলিশ লুকিয়ে রেখে বিক্রি করছেন কয়েকজন জেলে

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে,চরের জঙ্গলে,কচুরিপানার মধ্যে গোপনে ইলিশ বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা অমান্য করে পদ্মায় মা ইলিশ শিকার করছেন অসাধু জেলেরা। ইলিশ ধরা ও বিক্রি ঠেকাতে পদ্মায় অভিযানও চলছে। তবুও নতুন কৌশলে ট্রলারগুলোতে কোনো বাতি ব্যবহার না করে রাতে চলছে মা ইলিশ শিকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ১০টি গ্রুপ বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ, কালিদাশখালি,চৌমাদিয়া,চকরাজাপুর, দিয়াড়কাদিরপুর,আলাইপুর, আতারপাড়া ও কিশোরপুর  এলাকায় মা ইলিশ ধরে বিক্রি করছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদ্মাপাড়ের কয়েকজন জেলে বলেন, ‘এই মৌসুমে দিনে কড়াকড়ি থাকায় লোকচক্ষু আড়াল করতে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ইলিশ ধরা হয়। সেই মাছ নৌকা থেকে নামিয়ে নদী তীরের ঝোপ-জঙ্গলে, কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়। সুযোগ পেলে কিছু  বাড়িতে মজুদ করা হয়। আর মুঠোফোনের মাধ্যমে ক্রেতাকে ডেকে নিয়ে তা বিক্রি করা হয়।’ 

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা থেকে ইলিশ শিকার করে আসা ট্রলারগুলো সারিবদ্ধভাবে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে নোঙর করে আছে। প্রতিটি ট্রলারের খন্দ (ট্রলারে মাছ সংরক্ষণ করার বাক্স) থেকে দু’তিন জন জেলে শিকার করা ইলিশ মাছ বের করে দিচ্ছেন। অন্য জেলেরা ছোট ও বড় ইলিশ পৃথক করে ঝুড়িতে তুলে দিচ্ছেন। সেই মাছ গোপন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।

 

এক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, ৫শ’ থেকে ৬শ’ গ্রামের প্রতি কেজি ইলিশ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ৭শ’ থেকে ৮শ’ গ্রামের প্রতি কেজি ইলিশ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং কেজি সাইজের ইলিশ ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানান, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে সস্তায় কিনে পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিচ্ছেন অনেকই। তবে সারা বছর কম দামে ইলিশ খেতে চান। তাই শক্তহাতে অসাধু জেলেদের প্রতিরোধের দাবি তাদের। স্থানীয় এক ব্যক্তির মন্তব্য, নিষিদ্ধ এ সময়ে ইলিশ ধরা,পরিবহন, মজুদ ও বিক্রি বন্ধে যারা কাজ করবে, তাদের সহযোগিতায়ই নদীতে অবাধে মা ইলিশ শিকার করছে জেলেরা।

মৎস্য অধিদপ্তর জানায়,মা ইলিশ সংরক্ষণে, ৮ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাত থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। গত কয়েকদিনে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করা হয়েছে জেলেদের। এ সময় নদীতে নৌকা জাল ফেলেই চরে পালিয়ে গেছে অনেক জেলে। আটক ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় জাল।

বাঘা উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) মৎস্য অফিসার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘হাট-বাজারে কোথাও ইলিশ বিক্রি হয় না। তবে কিছু জেলে চুরি করে মাছ ধরে বিক্রি করছে, এটা সত্য। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১২লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ৮৩ হাজার মিটার জাল আটকের পর পুড়িয়ে ধ্বংশ করা হয়েছে। ১০৩ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে। ৬টি মোবাইল কোর্টে ১০ জন জেলের ১১ হাজার টাকা জরিমানা ও ৭ জনের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ক্রেতা ও জেলেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top