রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুদকে লিখিত অভিযোগ


প্রকাশিত:
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০১:১০

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:১৯

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রার ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ হয়েছে। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিকাহ রেজিস্ট্রার জহুরুল আলম দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় এবং সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসককেও দেয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্রে জেলা রেজিস্ট্রার ইলিয়াস হোসেন ও তার কার্যালয়ের প্রধান সহকারী ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, বিনা নোটিশে দায়িত্ব প্রত্যাহার করে অন্যজনকে দায়িত্ব দেয়া, একই ইউনিয়নে দুইজন নিকাহ রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব দেয়া, জেলা রেজিস্ট্রারের চিঠি প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পোস্ট করা, নিয়মিত অফিস না করা এবং প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশ অবজ্ঞা করার অভিযোগ তোলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

জহুরুল আলম অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তিনি ৫ নম্বর চারঘাট  নিকাহ রেজিস্ট্রার। জেলা রেজিস্ট্রার ইলিয়াস হোসেন ও প্রধান সহকারী ইসমাইল হোসেন তার লাইসেন্স স্থগিত করেছেন। এরপর মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ৬ নম্বর ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার আবদুল ওয়াদুদকে দায়িত্ব দিয়েছেন। একইভাবেব চারঘাট ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডের জন্য চারঘাট পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমানকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

জহুরুল আলম দায়িত্ব ফিরে পেতে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সুপারিশ সহকারে জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জেলা রেজিস্ট্রার তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।

মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, জহুরুল আলম তার সঙ্গে মারমুখি আচরণ করেছেন। তবে জহুরুল দাবি করেছেন, মামলাটি মিথ্যা। মামলায় ঘটনার তারিখ হিসেবে যেদিন উল্লেখ করা হয়েছে সেদিন তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ছিলেন।

জহুরুল আলম উল্লেখ করেছেন, সম্প্রতি তিনি একটি মিথ্যা মামলায় পড়েছেন। বিচারে দোষী প্রমাণিত না হলেও মামলার কারণ দেখিয়ে জেলা রেজিস্ট্রার তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তারপর আবদুল ওয়াদুদকে দায়িত্ব দিয়েছেন। জেলা রেজিস্ট্রার স্থগিত ও দায়িত্ব দেয়ার দুটি চিঠি ইস্যু করেন গত বছরের ১ ও ২ নভেম্বর। দুটি চিঠিই একটি খামে জহুরুল আলমের কাছে পাঠানো হয়।

২ নভেম্বর ওয়াদুদকে দায়িত্ব দেয়ার চিঠি ইস্যু হলেও সেদিনই চিঠির খামটি চারঘাটের বাঁকড়া বাজার থেকে পোস্ট করা হয়েছে। জহুরুল দাবি করেছেন, ওয়াদুদ মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়েছেন। আর তিনিই রাজশাহী শহরে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে চিঠি এনে বাঁকড়া বাজার থেকে পোস্ট করেছেন। তা না হলে চিঠি রাজশাহী থেকেই পোস্ট হতো।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করে জেলা রেজিস্ট্রার ও প্রধান সহকারী মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ৫ নম্বর বাকশিমইল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মোকাদ্দিম হোসেন শাওনকে পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডের এবং রাজশাহী মহানগর এলাকার একটি ওয়ার্ডের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন।

অভিযোগ করা হয়েছে, টাকার বিনিময়ে পবার হুজরিপাড়া ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ডের জন্য মো. হাবিবুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালার কোন তোয়াক্কা করা হয়নি। জেলা রেজিস্ট্রার নিয়মিত অফিসও করেন না। বিশেষ করে সপ্তাহের রোববার তিনি অফিসে যান না। পরেরদিন তিনি হাজিরা খাতায় সই করেন বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।

জেলা রেজিস্ট্রার ইলিয়াস হোসেন বলেন, টাকা পয়সা নিয়ে এক ইউনিয়নে একাধিক নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া হয় না। কোথাও যদি একাধিক ব্যক্তিকে দেয়া হয়, তাহলে সেটা স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশের ভিত্তিতেই দেয়া হয়েছে। তিনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সুপারিশ অবজ্ঞা করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। এছাড়া সপ্তাহের রোববার অফিস না করার অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।

আরপি/ এসআই-১১



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top