রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


এসএসসির প্রশ্নফাঁস: মধ্যরাতে কেন্দ্র সচিবসহ আটক ৩


প্রকাশিত:
২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২০:১৪

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩০

সংগৃহিত

চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে কেন্দ্র সচিবসহ তিন শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই একটি মামলাও করা হয়েছে।

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আটকরা হলেন- নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও একই কেন্দ্রের সচিব লুৎফর রহমান, একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক যোবায়ের হোসেন ও রাসেল মিয়া।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভূরুঙ্গামারী থানা ও ইউএনও কার্যালয়ে রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দীর্ঘ চার ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

এর আগে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ও পুলিশ সুপার আল আসাদ মাহফুজুল ইসলাম ভূরুঙ্গামারী থানা ও ইউএনও কার্যালয়ে ওই রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য অফিসার আদম মালিক চৌধুরীকে বাদ দিয়ে এই মামলা করা হয়।

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। তবে ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মামলা ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, চলমান এসএসসি পরীক্ষার শুরুর দিনে ভূরুঙ্গামারীর নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য প্যাকেট করা বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নের প্যাকেটে ভরে বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নের সঙ্গে বিজ্ঞানের তিনটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রও বের করে নেওয়া হয় থানার লকার থেকে। এসব প্রশ্ন পরীক্ষার আগে হাতে লিখে শিক্ষার্থীদের দিয়ে দিতেন অভিযুক্ত শিক্ষকরা। আর হাতে লেখা এসব প্রশ্নপত্র ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং মেইলেও শিক্ষার্থীদের কাছে টাকার বিনিময়ে সরবরাহ করা হচ্ছিল।



এরমধ্যে বিষয়টি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার দিনে প্রকাশ পেলে স্থানীয় প্রশাসন ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ইংরেজি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি স্থানীয় অনেকেরই নজরে আসলে অনেকটা বাধ্য হয়েই থানায় অভিযোগ করেন কেন্দ্রের ট্যাগ কর্মকর্তা।

পরে এই অভিযোগের সূত্র ধরে মঙ্গলবার বিকেলে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। এরপর নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান ছাড়াও একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক যোবায়ের হোসেন ও রাসেল মিয়াকে আটক করে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ।

এসবের মাঝে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে সরেজমিনে ঘটনা পরিদর্শনে ভূরুঙ্গামারীতে আসেন দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ও পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলামসহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। পরে ভূরুঙ্গামারী থানা ও ইউএনও কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তারা। সেখান থেকে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান থানায় গিয়ে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আবারও ইউএনও কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠকের সময় ইউএনও কার্যালয় ও থানা কার্যালয়ের মূল ফটক তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। পরে চার ঘণ্টার বৈঠক শেষ রাত ১২টার পরে বের হন সবাই। এ সময় কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষারত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা না বলে দ্রুত গাড়িতে উঠে স্থান ত্যাগ করেন বৈঠককারী কর্মকর্তাগণ। একই সময় গণমাধ্যমকর্মীরাও তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও কোনো উত্তর না দিয়েই সটকে পড়েন সবাই।

পরে বিষয়টিতে ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোরশেদুল আলম জানান, এ ব্যাপারে মামলাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলার তদন্ত চলমান। এখনই অনেক কিছু বলা যাচ্ছে না।

 

 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top