রাজশাহী রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১

ফলকে মুক্তিযোদ্ধা বাবার নাম দেওয়ায় ছেলেকে পেটানোর অভিযোগ


প্রকাশিত:
১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:৪১

আপডেট:
২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:১৪

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনারের উদ্বোধনী ফলকে মুক্তিযোদ্ধা বাবার নাম লেখায় মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মাজেদুরকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।। সেইসাথে জের ধরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও আরেক শিক্ষককেও পেটানোর ঘটনা জানা গেছে। তবে শিক্ষক মাজেদুরের বিরুদ্ধে ৫ম শ্রেনীর এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগে মামলা হয়েছে। তিনি এখন কারাগারে।

স্থানীয় লোকজন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, পুঠিয়ার রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা স্কুলে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। এটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। আগামী ১৬ ডিসেম্বর এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। শহীদ মিনারটি নির্মাণে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাড়াও স্থানীয় লোকজন আর্থিকভাবে সহায়তা দেন। ঐ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী ছিলেন এই শহীদ মিনারে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারীদের অন্যতম। স্থানীয় সম্মানিত মানুষ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শহীদ মিনারের উদ্বোধনী ফলকে রহমত আলীর নাম লেখা হয়। এনিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দুটি পক্ষ হয়ে যায়। তবে মাজেদুর রহমান সোমবার বিভিন্ন দফতরে তদবির করেন,যাতে শহীদ মিনারের ফলক থেকে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর নাম বাদ দেয়া না হয়। এরইমধ্যে শিক্ষক মাজেদুরের বিরুদ্ধে ৫ম শ্রেনীর এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। একই সময় তারা রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবুল কালাম আজাদের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হয় হামলাকারীরা। তাকেও এলোপাতাড়ি মারপিট করা হয়।

প্রধান শিক্ষক অবুল কালাম আজাদ হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, শহীদ মিনারে মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর নামফলক নিয়ে একটা আপত্তি উঠেছিলো। আমাকে এই নাম ফলক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানও আপত্তি জানান। এটি সরকারি কোন অর্থে হয়নি এবং মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর নাম ব্যবহারের কারণও আমি তাকে জানাই। ছাত্রী স্ত্রীলতাহানীর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলি দাবি করেছেন, শহীদ মিনারের ফলকে আমার নাম থাকায় মাজেদুরকে মারপিট করা হয়েছে। ও যাতে এ নিয়ে না এগোই এ জন্যই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। প্রভাবশালীরা এটা করছে।

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষক মাজেদুর রহমানকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় গ্রামবাসী। পরে থানায় মেয়ের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। সেই মামরায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: অলিউজ্জামান জানান, দুটি ঘটনা আমি শুনেছি। একটি হলো শহীদ মিনারের উদ্বোধনী ফলকে মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার নিয়ে বিরোধ। আরেকটি এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেয়ার জন্য পুলিশকে বলেছি। আর একটি ঘটনার সাথে আরেকটির যোগসূত্রতা আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top