রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানের দম্ভোক্তির প্রতিবাদে সমালোচনার ঝড়, কর্মসূচি ঘোষণা


প্রকাশিত:
২৮ জানুয়ারী ২০২১ ০৩:২০

আপডেট:
২৮ জানুয়ারী ২০২১ ০৩:৪৫

ফাইল ছবি

সাংবাদিকের নিয়ে দম্ভোক্তি প্রদর্শন করায় রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহা: মোকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সর্বমহলে সমালোচনার ঝড় বইছে। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। এরইমধ্যে তাকে অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ।
জানা গেছে, এক পুলিশ কনস্টেবলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বেলা পৌনে তিনটার সময় রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহা: মোকবুল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। তবে ফোন রিসিভ করে ধমকের স্বরে সাংবাদিকদের নিয়ে আজেবাজে কথা বলতে শুরু করেন শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান। সাংবাদিকদের সম্পর্কে বাজে ভাষা প্রয়োগ করে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে তাদের কথপোকথনের ২ মিনিট ৫ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। সাংবাদিকরাও এর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
শিপার মাহমুদ নামে এক সংবাদকর্মী ওই ফোনালাপের রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেন, “কোন দেশে আছি! একজন সংবাদিকের সাথে যারা এমন অশুভ আচরণ করতে পারে, সাধারন মানুষের সাথে তাদের আচরণ কেমন হবে সেটা বলার আর অবকাশ রাখে না।” মোহাম্মদ অংকন নামে বিশিষ্ট একজন কলামিস্ট নিজের টাইমলাইনে সেটি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, “দুঃখজনক ঘটনা। সাংবাদিকের সাথে এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমানুল্লাহ আমান ভাই আপনি বিচলিত হবেন না। আপনার দায়িত্ব পালন করে যান।” সুমন আহমেদ বিজয় নামে একজন বলেন, “ডিআইজির সন্তান খ্যাত অফিসারের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানাচ্ছি।” আবুল কালাম আজাদ নামে এক সাংবাদিক লিখেছেন, “শিক্ষাবোর্ডের একজন চেয়ারম্যান তার আচরণ এবং ভাষা হবে নম্র। যার ভাষা ব্যবহার দেখে অনেকেই শিখবে। যে স্যারের সম্মান নিতে জানেনা, তাকে কোনোদিন স্যার বলবেন না। সে তো শিক্ষিত মূর্খ।”
ফেসবুকে শেয়ার করা পোস্টে অনেকেই নানারকম মন্তব্য করেছেন। সালাউদ্দীন মিন্টু নামে একজন মন্তব্য করেন, “বর্তমানে নেতাদের ক্ষমতার চেয়ে আমলার ক্ষমতা বেশি।” শাহাদত রাজীন সাগর নামে একজনের মন্তব্য, “আপনাকে প্রশ্ন করেছে, আপনি কে? তার কাছে আমার প্রশ্ন রইল, সে কে? প্রজাতন্ত্রের চাকরের এত বড় সাহস কি করে হয়, যার বউয়ের পার্লার খরচও জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে হয়। ধিক্কার জানাই।”
ইলিয়াস রানা নামে একজন মন্তব্য করেন, “উনার ব্যবহারই বলে দিচ্ছে অভিযোগটা সঠিক ছিল।” বুলবুল আহমেদ লিখেন, “বেয়াদবটার তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা নাই। ধিক্কার জানাই।”

এছাড়া রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহা: মোকবুল হোসেনের জন্মস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রফেসর মোকবুল হোসেন বংশীয়ভাবে স্বাধীনতার মতাদর্শ বিরোধী। তার ছোটভাই তোফাজ্জল হোসেন বুলবুল বর্তমানে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারই বড়ভাই আবুল হোসেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হয়ে অংশ নেন এবং শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। এমনকি ওই নির্বাচনে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বিএনপির পক্ষে প্রচার-প্রচারাণাও চালান। তাদের কেউই আওয়ামী মতাদর্শে বিশ্বাসী নন বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

এদিকে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহা: মোকবুল হোসেনের এমন দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে ও তাকে অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। আগামী মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট প্রেসক্লাব চত্বরে এক বিরাট মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহী প্রেসক্লাব ও স্মৃতি পরিষদ সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্ব এবং সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলার সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, সমাজসেবকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন।

 

আরপি/ এআর


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top