রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

১২ দিনের প্রেমে আটক বিকাশ প্রতারক চক্রের ২ সদস্য


প্রকাশিত:
৩০ নভেম্বর ২০২০ ২১:২১

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৩৬

আটককৃত বিকাশ প্রতারক চক্রের ২ সদস্য

রাজশাহীতে বিকাশ প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আসামিদের থেকে প্রতারণার নগদ ৭৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

১৬ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্রীর মোবাইলের নগদ একাউন্ট থেকে বিকাশ প্রতারক চক্রের একটি সংঘবদ্ধদল কৌশলে পিন কোড চুরি করে নগদ ৫১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এই ছাত্রীর বাবা গত ২৫ নভেম্বর মহানগর গোয়েন্দা শাখায় একটি অভিযোগ দেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিবি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারক চক্রের অবস্থান ও সন্ধান চিহ্নিত করে।

পরবর্তীতে ভিকটিমের মাধ্যমে বিশেষ কৌশলে প্রতারক চক্রকে রাজশাহী মহানগরের রাজপাড়া থানাধীন লক্ষীপুর মোড়স্থ মাস্টারসেফ বাংলা রেস্তোরার সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, প্রতারকরা ওই ছাত্রীর বিকাশ থেকে হাতিয়ে নিয়েছিল ৫১ হাজার টাকা। পরে পুলিশের পরামর্শে তিনি ওই প্রতারকের সঙ্গেই শুরু করেন প্রেমের অভিনয়। এই ১২ দিনেই প্রেম জমে উঠলে ওই প্রতারক কলেজছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসে। আর তখনই এক সহযোগীসহ ওই প্রতারককে আটক করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলো, মো. হাসান খাঁন(১৯), পিতা-মো. আব্দুল খাঁন, সাং-জাঙ্গালপাশা মধ্যপাড়া, মো. মাহমুদ হাসান ওরফে বায়েজিদ(১৯), পিতা-নূর মোহাম্মদ শেখ, সাং-জাঙ্গালপাশা পূর্বপাড়া, উভয় থানা-ভাঁঙ্গা, জেলা-ফরিদপুর।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের গ্রেফতারকৃতরা আরও ৪ জনের নাম প্রকাশ করেছেন। এই আসামিরা পালাতক আছে। পালাতক আসামীরা হলো, সোহাগ খাঁন(২৫), পিতা-মো. শওকত খাঁন, সাং-জঙ্গলপাশা উত্তরপাড়া, মো. সুরুজ ফরাজি(৩০), মো. সবুজ ফরাজি(২২), উভয় পিতা-মো. শহিদ ফরাজি, উভয় সাং-জাঙ্গালপাশা পূর্বপাড়া, সাদ্দাম হোসেন(২৬), পিতা-মো. সিরাজ ফরাজি, সাং-জাঙ্গালপাশা(শিমুইল বাজারের পাশে)। আসামিরা ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা। আরএমপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন। গত ১৬ নভেম্বর তার মুঠোফোনে অচেনা একটি নম্বর থেকে কল আসে। ওই ব্যক্তি ছিল প্রতারক হাসান। তবে সে নিজেকে ওই শিক্ষার্থীর কলেজের শিক্ষক পরিচয় দেয়। প্রতারক হাসান বলে, করোনাকালে বিকাশের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে। কিন্তু যে নম্বরে বৃত্তি পাঠানো হবে সেই বিকাশে অন্তত ৫০ হাজার টাকা থাকতে হবে। তাহলেই এই নম্বরে সরকার টাকা পাঠাবে।

বিষয়টি আঁচ করতে না পেরে ওই শিক্ষার্থী তার অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা তোলেন। আর তার বিকাশে আগে থেকেই কিছু টাকা ছিল। ওই ছাত্রী বিকাশে টাকা তোলার পর প্রতারক হাসান কৌশলে তার পিন নম্বরটি জেনে নেয়। এরপর সে ওই ছাত্রীর বিকাশ থেকে ৫১ হাজার টাকা সরিয়ে নেয়। পরে প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে ওই ছাত্রী ডিবি পুলিশের স্মরণাপন্ন হন।  আসামিদের বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা নগরীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

আরপি/এমএএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top