প্রতিবন্ধী ৩ ছেলে নিয়ে চরম দুর্ভোগে বিধবা সুফিয়া

রাজশাহীর মোহনপুরে মৌগাছি ইউনিয়নের নং ৩ ওয়ার্ডের গোপালপুর মধ্যপাড়া গ্রামে বিধবা সুফিয়া বেগমের বসতি। সংসারে ৩ ছেলে থাকলেও তারা সকলেই প্রতিবন্ধী কেউ হাটতে চলতে পারেনা । স্বামী আজিজুল ইসলাম ১০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন।সংসারের হাল টানতে হয় সুফিয়া বেগমকে।
সুফিয়া বেগম জানান, তার ঘরের প্রথম সন্তান মোঃ সালাউদ্দিন (৩২), দ্বিতীয় সন্তান আলাউদ্দিন (২২), তৃতীয় সন্তান আতিকুর (১৮) সবাই শারিরীক প্রতিবন্ধী। এই প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে তাদের সংসারে অভাব অনটনের কমতি নেই।
পরিবারটির ৩ জন প্রতিবন্ধী হলেও সরকারি বেসরকারি যে সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা। বড় ও ছোট ছেলে পেয়েছেন প্রতিবন্ধী কার্ড। দেড় বছর আগে গৃহনির্মাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় জরিপকালে তাদের নাম আসায় পেয়েছেন আশ্রয়ন প্রকল্পের ১ কক্ষ বিশিষ্ট বাড়ী ও একটি পায়খানা।
তার ৩ ছেলে শারিরীক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তারা বিভিন্ন স্থানে যেতে পারেনা। সে কারনে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে অনেকটা বঞ্চিত তারা। প্রানঘাতি বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ায় সরকারী নির্দেশনা মেনে তারা ঘরে অবস্থান করছেন। এরই মধ্য ৩ বার মৌগাছি ইউনিয়নে সরকারী ত্রাণ বিতরণ হলেও ত্রান বিতরণের তালিকায় নেই তাদের নাম।
সুফিয়া বেগমের ছেলেরা বলেন, প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে মানবিক সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা। যদি কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের দিকে ফিরে তাকায়, তাহলে কোন রকমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে বাকি সময়টুকু পার করতে পারবে বলে জানায় পরিবারটি ।
এ ব্যাপারে সুফিয়া বেগম বলেন, এক সময় পরিবারের কর্তা থাকলেও কোন রকমে সংসার চালানো সহজ ছিল। আমার ছেলেরা চলাফেরা করতে পারেনা, কোন সংস্থা বা সরকারিভাবে থেকে তাদের চলাফেরার জন্য পায়নি হুইল চেয়ার।
মানুষের কামলা খাটতে না পারায় জীবন জীবিকার প্রয়োজনে পেট চালোনোর দায়ে ভ্যান ভাড়া নিয়ে ৩ ভাই মিলে হাট বাজারে গিয়ে ভিক্ষা করে। ভিক্ষা করে দিন শেষে ভ্যান ভাড়া দিয়ে যা থাকে সেই টাকা দিয়ে বাজার ঘাট করে কোন রকমে চলে তাদের সংসার । কিন্তু ১ মাস যাবত করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা ঘরে থাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা কোন সংস্থা আমাদের কোন খোঁজ নেয়নি। অনেক সময় দু'বেলা না খেয়ে থেকে নানাবিধ সমস্যা ও কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছে পরিবারটি।
এ বিষয়ে মৌগাছি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নাসির উদ্দিন বলেন, পরিবারটি খুবই অসহায়। ভুলবশত তাদের নামটি তালিকাভুক্ত করা হয়নি। সামনে যে সরকারী ত্রাণ আসবে সেই তালিকায় তাদের নাম দেওয়া হবে।
মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-আমিন বিশ্বাস বলেন, প্রতিবন্ধী এ পরিবারটি অসহায়। সরকারি ও পরিষদের মাধ্যমে যে সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়া সম্ভব হবে তা আমি তাদের যথাযথভাবে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
আরপি/ এএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: