বাঘায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
নৌকার প্রার্থীর উপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর হামলা, আহত ২০
রাজশাহীর বাঘায় ইউনিয়ন পরিষদের চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন। বাউসা ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে কথা বলতে গেলে নৌকার প্রার্থীর দলীয় নেতাদের উপর হামলার চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থীরা। এই হামলায় তাদের ২০ জন আহত হয়েছে।
এই ঘটনায় পৃথক দুটি অভিযোগ করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থী শফিকুর রহমান শফিকের অভিযোগে রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় বাউসা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের টলটলিপাড়া বাউসা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাউসা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আ.লীগের দপ্তর সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিক। একই দলের উপজেলা আ.লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
সমঝোতার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন আগামী ৭ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের জন্য নৌকার প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের নেতাদের সাথে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান। তাঁদের সাথে কথা না বলে কৌশলে স্থানীয় মসজিদের মাইকে প্রচার করেন যে, নুর মোহাম্মদ তুফানের বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে স্থানীয় লোকজন লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালায়। এতে ২০ জন আহত হয়েছে।
আহতদের মধ্যে রানা, শরিফুল, শিহাব, হিমেল, শিমুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় দুটি মোরটসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফানের স্ত্রী রোজিনা আকতারী পলি বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নৌকার প্রার্থী ৩০/৩৫টি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেট কার নিয়ে ৬০/৭০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হামলা চালায়।
এ সময় আমার স্বামী বাড়িতে ছিলনা। আমি বাড়ির গেট খুলে না দেওয়ায় ভাঙ্গার চেষ্টা চালায়। স্থানীয় গ্রামবাসি এত রাতে অনেক বেশি লোকজন দেশীয় অস্ত্র দেখে মাইকে প্রচার করেন, যে তুফানের বাড়িতে সরকারি দলীয় লোকজন হামলা করে করেছে। আমার স্বামীও ৮ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় অভিযোগ করা হলেও কাউকে গ্রেপ্তারা করা হলো না। কিন্তু ওদের মিথ্যা অভিযোগে প্রার্থী নূর মোহাম্মদ তুফান সহ চার কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিক বলেন, আমরা একই দলের রাজনীতি করি। সমঝোতার আশায় কয়েকজন নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। এ সময় হঠাৎ মাইকে প্রচার করা হচ্ছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে। আমরা হতভম্ব হয়ে যায়।
কিছু বুঝে উঠার আগেই এলাকার লোকজন দেশীয় অন্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করা হয়েছে, এতে আমরা সবাই তাঁদের হামলায় আহত হয়েছি। এছাড়া আমার সাথে যাওয়া দুই জনের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা তাঁদের আক্রমণ থেকে কোন মতে প্রাণে বেঁচে এসেছি। আমি বাদি হয়ে ৫০ জনকে অভিযুক্ত করে দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি )সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নৌকার দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে একই দলের আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাঁদের মধ্যে সমঝোতা করতে গিয়ে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরপি/ এমএএইচ-০৯
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: