রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৫, ১২ই বৈশাখ ১৪৩২

শহীদ জননী সুরাইয়া সালামের ইন্তেকাল


প্রকাশিত:
৭ জুলাই ২০২১ ২৩:৪৭

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৪

ফাইল ছবি

রাজশাহীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের সহধর্মিণী এবং অন্যতম দুই শহীদের জননী সুরাইয়া সালাম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। বুধবার সকাল ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর লক্ষিপুরস্থ মেয়ের বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।

বুধবার বাদ আসর নগরীর লক্ষিপুর ঝাউতলা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সুরাইয়া সালামের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁকে হেতেম খাঁ কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।

সুরাইয়া সালামের স্বামী মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বঙ্গবন্ধু রাজশাহীতে আসলে তার বাড়িতেই আতিথেয়তা গ্রহণ করতেন বলে জানান শহরের প্রবীণ ও বিজ্ঞজনরা।

তাদের তিন ছেলে এবং ৫ মেয়ের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন দুজন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে তার বড় ছেলে তৎকালীন ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী সেলিমুজ্জামান সেলিম ও রাজশাহী কলেজের একাদশ শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী ওয়াসিমুজ্জামান ওয়াসিমকে পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধে দুই ছেলেসহ পরিবারের মোট পাঁচ সদস্য শহীদ হলেও তার স্বামী রাজশাহী অঞ্চলে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সুরাইয়া সালাম স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নারী ও সমাজ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

সুরাইয়া সালামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী প্রেসক্লাব ও সমাজের বিশিষ্টজন।

রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, শহীদ জননী সুরাইয়া সালাম নারীদের জন্য ছিলেন অনুপ্রেরণার। তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভাষাসৈনিক বেগম মনোয়ারা রহমানের সঙ্গে যৌথভাবে রাজশাহী অঞ্চলের দরিদ্র নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন জনসেবামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন সকলের হৃদয়ে। অত্যন্ত দানশীল নারী ছিলেন সুরাইয়া সালাম। তাঁর কাছে এসে কখনো খালি হাতে ফিরে যেতে হতো না কাউকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে হারিয়েছেন দুই সন্তানকে। তবুও শোক বুকে নিয়েই কাজ করেছেন দেশের জন্য, জনগণের জন্য। সমাজসেবায় তাঁর ভূমিকা অনন্য। তবে দুঃখজনক বিষয়, জীবিত অবস্থায় তিনি রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি বা মর্যাদা পাননি। আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শহীদ জননী সুরাইয়া সালামের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানাই।

 

 

আরপি/এসআর-০৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top