রাজশাহী শনিবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৫, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩২

শান্তির নগরীতে অশান্তি ছড়াচ্ছে মশা, জনমনে ক্ষোভ


প্রকাশিত:
১৪ মার্চ ২০২১ ১৮:২৬

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:১৬

সংগৃহীত

রাজশাহীতে শীত যেতে না যেতেই হঠাৎই বেড়েছে মশার উপদ্রব। বাড়ি, অফিস কিংবা চায়ের আড্ডা- কোথাও স্বস্তিতে নেই নগরবাসী। চায়ের দোকানে কয়েল জ্বালিয়ে বসলেও রক্ষা হয় না। শান্তির নগরী রাজশাহীতে এখন মশার রাজত্ব। এনিয়ে জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মশা নিধনে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ নগরবাসীর।

নগরীর সাহেব বাজারের জুয়েলার্স ব্যবসায়ী কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা শ্রী সুমন চৌধুরী বলেন, ‘মশার যন্ত্রণা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। সকাল-দুপুর কিছুটা সহনীয় হলেও সন্ধ্যায় বাসায় মশার আসর জমে। কয়েল জ্বালিয়েও পরিত্রাণ মেলে না।’

সুমন চৌধুরীর আক্ষেপ, ‘কাজের সময় কাজ করব না মশা মারব বুঝা দায়। অনেক সময় কয়েলের ধোঁয়ায় দুর্বল হয়ে পড়া মশা খাবার থালায় এসে পড়ে। রাসিকে ভ্যাট-ট্যাক্স ঠিকই দিচ্ছি, কিন্তু সেবা পাচ্ছি না।’

রাজশাহী সিটি কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘শীত যেতে না যেতেই মশার উপদ্রব বেড়েছে। মশার কামড়ে ঘরে থাকা মুশকিল। মশার কারণে কোনো কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না।’

তিনি আরও জানান, পড়াশোনার তাগিদে থাকি নগরীর প্রাণকেন্দ্র মালোপাড়ায়। এখানে ড্রেনের ময়লা আবর্জনার কারণে মশার রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এরপরও রাসিক থেকে মশা নিধনে নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ। এ কারণেই বেড়েছে জনদুর্ভোগ।’


রুয়েট ও রাবির কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আম চত্বরের চায়ের দোকানে প্রায়ই আড্ডা চলে। কিন্তু মশার কারণে দু’দিকে দুটো কয়েল জ্বালিয়েও রক্ষা মেলে না। তাই এখন আড্ডা দেয়া বন্ধ করেছি। এখন হাঁটতে হাঁটতে আড্ডা চলে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক কর্মচারী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ঠিকমতো অভিযান পরিচলনা করলে রাজশাহীবাসী মশার থেকে অনেকটায় রেহাই পেত। কিন্তু এমন কার্যক্রম এ যাবৎকালেও চোখে পড়েনি। তাই বাধ্য হয়েই কয়েল, স্প্রে, জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাদের উদাসীনতায় আমরা তো আর হতাশ হয়ে বসে থাকতে পারব না।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান বলেন, ‘রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত মশা নিধনে রাসিকের তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। যার কারণে শুধু বাড়ি-ঘরেই নয়, বাইরেও কোথাও বসে থাকার উপায় নেই।’

তিনি যোগ করেন, ‘যদি রাসিকের প্রত্যেক ওয়ার্ডে ড্রেন ও আশপাশের জঙ্গল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলতো এবং নিয়মিত ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ দেয়া হতো তবে এ সমস্যার উত্তোরণ ঘটত।’

তিনি বলেন, আমরা সময় মতো খাজনা ট্যাক্স ঠিকই দিচ্ছি, কিন্তু কাঙিক্ষত সেবা পাচ্ছি না। দু’একবার ফগার মেশিন চালানো হলে শুধু ডিজেল আর কেরোসিনের গন্ধই মেলে, তাতে মশা যায় না। এসব খুবই দুঃখজনক।’

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মামুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বছরজুড়েই নগরীতে মশা নিধন কার্যক্রম চলমান থাকে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মশা নিধন কর্মকাণ্ড চলছে। প্রতিদিন পাঁচটি ওয়ার্ডে চার সপ্তাহ করে চলবে এ কর্মসূচি।’

 

 

আরপি/ আইএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top