রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১

ভোলাহাটে বছরজুড়ে পাওয়া যাবে আম


প্রকাশিত:
৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৫০

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২১

বারী-১১ জাতের আমবাগানে মালিক কামাল উদ্দিন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে এখন বছরজুড়ে পাওয়া যাচ্ছে আম। দিনের সাথে সাথে বদলাচ্ছে আয়ের নতুন নতুন কৌশল। উপজেলার নামো মুশরীভূজা গ্রামের আব্দুস শুকুর বিশ্বাসের ছেলে কামাল উদ্দিন আধুনিক পদ্ধতিতে আয়ের নতুন কৌশল হিসেবে ১১ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন বারী-১১ জাতের আম।  বছরজুড়ে পাওয়া যাবে এ আম।

কথা হয় কামাল উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, ১১ বিঘা জমিতে ৬/৭ বছর বয়সের প্রায় ৭০০-৮০০টি আমরূপালী জাতের গাছসহ লীজ নেন ২০২০ সালের প্রথম দিকে।

লীজ নেয়ার পর সব গাছের ডাল ছাঁটাই করে বারী-১১ জাতের আম গাছের ডগায় টেপ করেন। নিয়মিত পরিচর্যাসহ জমির লীজ দিয়ে মোট খরচ হয় ১৮ লাখ টাকা। এখন প্রত্যেকটি গাছে আম, গুঠি ও মুকুলধরে আছে। সম্প্রতি ৩৫০ টাকা কেজি দরে ২ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন তিনি। আসন্ন ২০২১ সালে ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন কামাল উদ্দিন। ১১ বছরের জন্য লীজ নেয়া জমিতে মোট আয় পাবেন ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বলেও আশা তার। তিনি জানান, ১০ বছর পর জমির মালিককে গাছসহ জমি বুঝিয়ে দিতে হবে। তবে তিনি বলেন, ১০ বছরের মধ্যে আম থেকে বিশাল আয় আসবে।

আমের গাছের পরিচর্যার ব্যাপারে তিনি বলেন, দেশীয় জাতের আম গাছের চেয়ে এ আম গাছের পরিচর্যা অনেক বেশী। বারী-১১ জাতের আম চাষের ক্ষেত্রে তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছেন। আম বাজারজাতে কোন সমস্যা হয় না। বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, একই মৌসুমে দেশীয় আম ব্যাপক উৎপাদনে মানুষের চাহিদা পূরণ হয়ে আমের চাহিদা কমে যায়। আম ব্যবসায়ীরা লাভবান হতে পারে না। কিন্তু বারী-১১ জাতের আম চাষ করে বছরজুড়ে আম উৎপাদন যেমন ব্যাপক হারে হয় তেমনি ব্যবসায়ী ক্ষেত্রে প্রচুর লাভবান হওয়া যাবে।

ব্যাপকভাবে বারী-১১ সহ বেশ কিছু জাতের আম রয়েছে যা বছরজুড়ে উৎপাদন হবে। ফলে দেশে সারা বছর আমের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। আধুনিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে আম ব্যবসায়ীসহ বাগান মালিকেরা লাভবান হবে।

আম ফাউন্ডেশন ভোলাহাটের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক চুটু জানান, বছরজুড়ে আম উৎপাদন হলে আমচাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়া যাবে এবং সারা বছর আমের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে। তিনি বলেন, কামলা (শ্রমিক) ছাড়া আরো কয়েক জন আমচাষ শুরু করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, বারো মাস আমচাষের ব্যাপারে চাষিদের কারিগরি সহায়তাসহ নিয়মিত পরিচর্যা ও সার প্রয়োগের মাত্রাসহ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। তিনি বলেন, এ আম উৎপাদনে সারা বছর মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও আম ফাউন্ডেশন সভাপতি মশিউর রহমান জানান, তিনি বারো মাস আমের উৎপাদনের কথা শুনে তাৎক্ষণিক আমবাগান সরেজমিন পরিদর্শনে যান। বার মাস আম উৎপাদন হলে আমচাষিরা আর্থিকভাবে স্বাভাবিক মৌসুমের উৎপাদিত আমের চেয়ে ব্যাপক লাববান হবেন। তাছাড়া ভোলাহাট উপজেলাসহ দেশের মানুষের সারা বছর পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে বলে মনে করে তিনি।  এছাড়া উপজেলার একমাত্র আম বিক্রয় কেন্দ্র আম ফাউন্ডেশনে সারা বছর আম বাজার বসলে আম ফাউন্ডেশনও আর্থিকভাবে লাভবান হবে বলে প্রত্যাশা তাঁর।

 

 

আরপি/এসকে



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top