রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতেও বাড়ছে ‘টু লেট’ লেখা ফলকের সংখ্যা


প্রকাশিত:
৪ জুলাই ২০২০ ১৩:০৩

আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:০১

রাজশাহীতেও বাড়ছে ‘টু লেট’ লেখা ফলকের সংখ্যা
শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন এমন অধিকাংশ ভাড়াটিয়াই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। পড়াশোনার সুবাদে পরিবারসহ বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম নয়। করোনা সংক্রমনের শঙ্কায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রাইভেট-কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণার পরে মেসগুলো ফাঁকা হলেও ভাড়া বাড়িগুলোতে ভাড়াটিয়া ছিলো।
 
কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে চলা এ সঙ্কট সামনের দিনগুলোতে খুব দ্রুত সমাধান না দেখায় এখন তারাও ভাড়া বাসা ছেড়ে গ্রামে পাড়ি দিচ্ছেন। এছাড়া অনেকেই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন কিন্তু বর্তমানে কাজ না থাকায় তারাও নগরী ছাড়ছেন। এতে নগরীতেও দিন দিন বাড়ছে ‘টু লেট’ লেখা ফলকের সংখ্যা।
 
করোনা পরিস্থিতিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাজশাহীর অধিকাংশ বাড়ির সামনে, বিদ্যুতের পুল ও দেওয়ালে দিন দিন ‘টু লেট’ ফলকের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে নগরীর বোয়ালিয়া ও মতিহার থানার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়ার বিজ্ঞাপন বেশি দেখা গেছে।
এ বিষয়ে কয়েকজন বাড়ির মালিকের সাথে কথা বললে তারা জানায়, সাধারণ ছুটি বা লকডাউনের কারণে অনেকেই তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। পরিবারের উপার্জনের ব্যক্তিটি পরে বাসা ছেড়ে দিয়ে অন্য কোনো মেস বা ছোট বাসায় উঠেছেন। এতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর বেশিরভাগ বাড়িতেই দু-একটা ফ্ল্যাট ফাঁকা আছে। ভাড়াটিয়া চেয়ে ‘টু লেট’ লেখা বিজ্ঞাপন সাঁটানো থাকলেও আগের চেয়ে কম ভাড়াতেও বাড়ির মালিকরা ভাড়াটিয়া খুঁজে পাচ্ছেন না। নতুন করে আরো অনেকেই বাড়ির মালিককে বাসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিচ্ছেন।
 
নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বাড়ির মালিক জামাল আল জাহিদ জানান, তার কানাডা প্রবাসী বোনের পাঁচতলা বাড়ির দেখাশোনা তিনিই করে থকেন। এক মাস ধরে একটি ফ্ল্যাট ফাঁকা থাকার পর তা পূর্ণ হলেও এ মাসে আরেক টি ফ্লাট আবার ফাঁকা হয়ে যায়। এতে গতকাল আবারও বাসা ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেওয়ালে সাঁটিয়েছেন। আগের চেয়ে কম ভাড়াতেও কোন ভাড়াটিয়া পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
 
তিনি আরো জানান, তার আশেপাশের বাড়িগুলোরও প্রায় একই অবস্থা। খরচ খুব একটা কমছে না কিন্তু দু একটা ফ্লাট ফাঁকা থাকছে।
করোনায় দীর্ঘ ৪ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত কয়েকদিন আগে পরিবারসহ নগরী ছেড়েছেন আবুল কালাম। তিনি জানান, তিনি রাজশাহী কলেজের এইচএসসি পরিক্ষার্থী। পড়াশোনার কারণে দীর্ঘ ৪ বছর থেকে পরিবারের সাথে রাজশাহীতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এখন কলেজ বন্ধ থাকায় কয়েকদিন আগে তিনি ভাড়া বাড়ি ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান।
বাসা বাড়ি পরিবর্তনে পরিবহণ নিয়ে কাজ করা উজ্জ্বল হোসেন জানান, করোনার পরে বাসা বাড়ির আসবাবপত্র নিয়ে অন্যত্র যাচ্ছেন এমন সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। আর এদের অধিকাংশই দেখা যাচ্ছে বাসার আসবাবপত্র আশেপাশের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রেখে কিছু জিনিসপত্র বাসায় নিয়ে যাচেছন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমান বলেন, রাজশাহীর আবাসিক কিংবা মেস মালিক সবায় করোনা সঙ্কটের মধ্যে আছে। সবাই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এবং হচ্ছেন। কিন্তু করোনাকালে শিক্ষার্থীদের এমন আন্দোলনের কারণে অনেক মেস মালিক তার মেসকে আবাসিক বাসা হিসেবে ভাড়া দিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কেননা অনেক মালিকই তার এই ভাড়ার উপর নির্ভরশীল। আর এখন যেহেতু মেসসহ আবাসিক বাসা ফাঁকা থাকছে সুতরাং ভাড়ার বিজ্ঞাপনও বেড়েছে।
 
 আরপি/ এআর-০৬


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top