রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

সাত বিশেষ ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসবেন আ.লীগ নেতাকর্মীরা


প্রকাশিত:
২৯ জানুয়ারী ২০২৩ ০৩:১১

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:১৯

ফাইল ছবি

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহীতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। ইতোমধ্যেই জনসভাকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে। রাজশাহী তো বটেই পুরো বিভাগে ছড়িয়ে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীকে নিজ চোখে দেখার উন্মাদনা।

জনসভাকে সফল করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের আনাগোনায় মুখরিত হয়েছে রাজশাহীর রাজনৈতিক ময়দান। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সকলেই। জনসভায় ব্যাপক লোক সমাগম ঘটাতে নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সমাবেশের দিন সাতটি বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আওয়ামী লীগের দাবির প্রেক্ষিতে সাতটি পৃথক রুটে সাতটি বিশেষ ট্রেন চলাচলের অনুমতি দেয় রেলপথ মন্ত্রনালয়।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জিএম অসীম কুমার তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে সাতটি বিশেষ ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাতটি পৃথক রুটে ট্রেনগুলো চলবে। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, বগুড়ার সান্তাহার, নওগাঁর রানীনগর, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ট্রেনগুলো ছাড়বে।

আওয়ামী লীগের এমপি মহোদয় শেখ হেলালের আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রনালয় এ সিদ্ধান্ত জানায়। আমরা সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করছি। আশা করি, বেলা ১২টা থেকে সোয়া একটার মধ্যেই ট্রেনগুলো রাজশাহীতে পৌঁছাবে। সাতটি বিশেষ ট্রেন চালুর ফলে রুটিন মাফিক চলা ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন রেল কর্মকর্তা।

এদিকে জনসভাস্থল পরিদর্শনে এসে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যদিও এই মাদরাসা মাঠ জনসভাস্থল, কিন্তু পুরো রাজশাহী শহর লোকে লোকারণ্য হবে। যেভাবে মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে, কোনোভাবেই এ মাঠে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। গত ১৪ বছরে এই রাজশাহী শহর বদলে গেছে। রাজশাহী শহরে যে ১৪ বছর আগে এসেছে, এখন এসে সে রাজশাহী শহরকে চিনতে পারে না। এই উন্নয়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার মাঠ পরিদর্শন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবার যে পরিকল্পনা সেটি মানুষ শুনতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে চেয়েছিলেন, তা হয়ে গেছে। আমরা সুফল পাচ্ছি। এখন তিনি তরুণদের নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চান, সেটাও হবে। মাঠ শুধু নয়, মাঠের বাইরেও প্রচুর মানুষ থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা শুনতেই মানুষের ঢল নামবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই জনসভায় রাজশাহী জেলা ও মহানগর, নাটোর, নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজশাহী বিভাগের অন্য জেলাগুলো থেকেও যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসতে চান, আসবেন। আমরা কমপক্ষে পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম আশা করছি।’

এই জনসভা নির্বাচনি জনসভা কি না এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লিটন বলেন, ‘নির্বাচনের আগের বছর তো নির্বাচনি বছর হিসেবেই কাউন্ট করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে, ‘আমি নির্বাচনি প্রচারণায় নেমে গেলাম।’ নির্বাচন এলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে যেন উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা দেখা দেয়। এর আগেই প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর জনসভা থেকে জনগণকে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।’

জনসভার সবশেষ প্রস্তুতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, রাজশাহীর জনগণ তাদের প্রাণের নেত্রীকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে তারা সময় গুণছেন, কখন জনগণের নেত্রী সফল প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী আসবেন? প্রস্তুতি পর্ব সব শেষ, জনগণ অধীর আগ্রহে বসে আছে তাদের প্রিয় নেত্রীকে দেখার জন্য, প্রিয় নেত্রীর মুখ দিয়ে দুটি কথা শোনার জন্য। যেটি তাদের কাছে অনুপ্রেরণা ও শক্তি হবে আগামী দিনের নৌকার বিজয়ের ক্ষেত্রে।

এছাড়াও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনসভাস্থল ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দান ও সংলগ্ন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পাশপাশি পুরো নগরীতে তিন হাজার পুলিশ মোতায়েন করবে বলে জানিয়েছে মহানগর পুলিশ (আরএমপি)। এর আগে, আরএমপির এক প্রজ্ঞাপনে গত ২৭ জানুয়ারি সকাল ৬টা থেকে ৩০ জানুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত শহরে পূর্বানুমতি ছাড়া সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক, পটকা এবং উড়ন্ত ড্রোন বহন, ব্যবহার, ধারণ এবং বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

 

 

আরপি/এসআর-২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top